চট্টগ্রাম নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের যাত্রা শুরু

নির্মাণের ৮ বছর পর পূর্ণ সক্ষমতায় উদ্বোধন

চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) গতকাল শনিবার উদ্বোধন করা হয়েছে। নির্মাণের পর দীর্ঘ ৮ বছর পর গতকাল এনসিটির পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ শুরু হলো। তবে এনসিটির ৫ বার্থের মধ্যে ১টি বার্থ চট্টগ্রাম-পানগাঁও পথে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।

প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এনসিটির দৈর্ঘ্য ৯৫০ মিটার। এনসিটি কর্তৃক বছরে প্রায় ১২ লক্ষ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব। এনসিটি ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে বছরে ১৮ লক্ষাধিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। কন্টেইনার হ্যান্ডলিং-এর প্রবৃদ্ধি বছরে শতকরা ১০ থেকে ১৪ ভাগ। ২০০৭ সালে এনসিটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলেও শুধু অপারেটর নিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এটি পূর্ণমাত্রায় অপারেশনে যেতে পারেনি।

এনসিটি নির্মাণের পূর্ব থেকেই এটি প্রাইভেট অপারেটর কর্তৃক পরিচালনার জন্য ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়ে আসে। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর বিদেশি না দেশি অপারেটর পরিচালনা করবে তা নিয়ে আবার জটিলতা দেখা দেয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ একপর্যায়ে আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করে। চারটি প্রতিষ্ঠান কারিগরিভাবে যোগ্য বিবেচিত হলেও শেষ পর্যন্ত মামলার কারণে আটকে যায়। বন্দর একবার নিজেরা পরিচালনা করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলেও আর্থিকভাবে সাশ্রয়ী হবে না বুঝতে পেরে তা থেকেও সরে আসে। শেষ পর্যায়ে স্থানীয়ভাবে দুই বছরের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। চারটি বার্থকে দুই ভাগে ভাগ করে আলাদা দুটি টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ২নং ও ৩নং বার্থের টেন্ডারে সাইফ পাওয়ার টেক এককভাবে এবং ৩নং ও ৪নং বার্থ সাইফ পাওয়ার টেক অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কারিগরি ও আর্থিকভাবে যোগ্য বিবেচিত হয়। পরবর্তীতে বন্দরের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল এ ৪টি বার্থের কাজ উদ্বোধন করা হয়।

গতকাল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অনেক কাজ করতে হবে। বে-টার্মিনাল ও লালদিয়া টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বন্দরের সম্প্রসারণের লক্ষে এ সকল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাইফ পাওয়ার টেকের স্বত্বাধিকারী তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, এনসিটির ৪টি বার্থ আগামী বছর ৮ লক্ষ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং করায় টার্গেট ধরা হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে বন্দরের সিসিটি ইয়ার্ডে কাজ করে প্রতিবছর আধুনিক যুগোপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ২ লক্ষ কন্টেইনার থেকে ৫ লক্ষ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এর প্রবৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। তিনি বলেন, তিনি সকল আইন-কানুন মেনে দেশি-বিদেশি প্রায় ২ হাজার দক্ষ জনবল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং কাজ পরিচালনা করছেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, এমএ লতিফ এমপি, শামসুল হক চৌধুরী এমপি বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমদ।