বিদেশি দুই নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পর বিভিন্ন দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক করে বার্তা দিয়েছে। কোন কোন দেশ একাধিক বার্তাও দিয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সতর্ক বার্তার পর উল্টো বিদেশি নাগরিকদের আগমন বেড়েছে। পুলিশের একটি গোপনীয় শাখার পর্যবেক্ষণে বিষয়টি উঠে এসেছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।
২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লা চেজার খুন হন। এই ঘটনার ৫ দিনের মাথায় রংপুরে খুন করা হয় জাপানি নাগরিক কোনিয়ো হোশিকে। এই দুই ঘটনার পরও বাংলাদেশে বিদেশিদের আগমনে প্রভাব পড়েনি।
২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর এই দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশে বিদেশি নাগরিক আসে ২৪ হাজার ৬৫৩ জন। ওই ঘটনার আগের দুই সপ্তাহে অর্থাত্ ১৩-২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশি নাগরিক আসে ২১ হাজার ১৫ জন। এতে সহজেই বুঝা যায়, বিভিন্ন দেশের সতর্ক বার্তার পরেও বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে আগমনে ভাটা পড়েনি।
ইতালীয় নাগরিক হত্যার পরের দুই সপ্তাহে ওই দেশের ৩৬০ জন নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে। ঘটনার আগের দুই সপ্তাহে আসে ৩৪৬ জন।
একইভাবে কুনিয়ো হোশি খুনের পর জাপানের ৭৫৬ জন নাগরিক বাংলাদেশে আসেন। ঘটনার আগের দুই সপ্তাহে আসে ৬৪৩ জন।
তাভেল্লা খুনের আগের দুই সপ্তাহে চীন থেকে বাংলাদেশে এসেছে ১ হাজার ৩৫৮ জন। ঘটনার পরের দুই সপ্তাহে আসে ২ হাজার ৩৪৮ জন। ভারত থেকে এই ঘটনার আগের দুই সপ্তাহে আসে ৪ হাজার ৭০০ জন। পরের দুই সপ্তাহে আসে ৭ হাজার ২০০ জন। ঘটনার আগের দুই সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার ২২৪ জন নাগরিক বাংলাদেশে এসেছে। পরের দুই সপ্তাহে আসে ১ হাজার ৩৮ জন।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতালীর নাগরিক খুনের আগের দুই সপ্তাহে আসে ২ হাজার ৫৯৬ জন এবং ঘটনার পরে আসে ২ হাজার ২২০ জন নাগরিক। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য থেকে ঘটনার আগে আসে ২ হাজার ৮৬৭ জন। পরে আসে ২ হাজার ২৬৭ জন।
তবে হত্যাকাণ্ডের পর এই দুই দেশের নাগরিক বাংলাদেশে আগমন দৃশ্যত কমেছে মনে হলেও আসলে কমেনি। ঈদের আগে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বসবাসরত (নাগরিকত্ব পাওয়া) বাংলাদেশিদের আগমন উপলক্ষে সেসময় সংখ্যাটা বাড়তি ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের স্বাভাবিক আগমন কমেনি বলে জানা গেছে।
পুলিশ সদর দফতরের দুই কর্মকর্তা বলেন, নিয়মিত বিদেশি নাগরিকরা যোগাযোগ করছেন। তারা সতর্ক বার্তা ও হত্যাকাণ্ড দুটি পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে তাদেরকে আমাদের কাছে ভীত বলে মনে হয়নি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দুই বিদেশি নাগরিক হত্যাকাণ্ডের পর সতর্কবার্তা জারির পরও বিদেশি নাগরিকদের আগমন কমেনি। এমনকি কোন ধরনের প্রভাব পড়েনি।