সমকাল : আপনি খুলনা পৌঁছেছেন, না এখনও পথে? কোনো কর্মসূচি, না ব্যক্তিগত সফর?
সাবিরুল ইসলাম :আমি এখনও পথে। আসলে আমার শ্বশুরবাড়ি খুলনায়; সেখানে বেড়াতে যাচ্ছি।
সমকাল :কাছেই সুন্দরবন রয়েছে, কখনও গেছেন? ওই অঞ্চলের ‘চুই ঝাল’ খেয়েছেন?
সাবিরুল :সুন্দরবনের কথা আমি জানি; বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট। কিন্তু যাওয়া হয়নি। এবার সময় কম; আরেকবার এলে যাব। চুই ঝাল ব্যাপারটা আসলে কী?
সমকাল :ওই অঞ্চলের নামকরা মাংসের আইটেম। খুবই ঝাল আর টেস্টি। আপনার শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে বললে জামাইয়ের জন্য সানন্দেই আয়োজন করবেন নিশ্চয়। খেয়ে মজা পাবেন।
সাবিরুল :হা হা হা। আপনি যখন বলছেন, টেস্ট করে দেখতে হবে।
সমকাল :এবার বাংলাদেশে এসে আপনি ড্রিম সেভেনটি ওয়ানের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন, নিউজে দেখলাম। আর কোনো কর্মসূচি আছে?
সাবিরুল :এবার এটা একটা বড় কাজ ছিল। শ্বশুরবাড়ি বেড়ানোও এবার দেশে আসার একটি উপলক্ষ। আপনি জানেন, দেশে এখন বিপুলসংখ্যক তরুণের হাতে স্মার্টফোন। ড্রিম সেভেনটি ওয়ান আমার উদ্ভাবিত ‘টিন ট্রিপিনিয়ার’ গেম নিয়ে এখানকার স্মার্টফোনের উপযোগী অ্যাপস তৈরি ও বাজারজাত করবে। এর নাম হবে ‘টিন ট্রিপিনিয়ার ফিউশন’।
সমকাল :এ ব্যাপারে সাধারণ পাঠকদের উপযোগী করে বলবেন?
সাবিরুল :এটা হচ্ছে তরুণ উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করতে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস প্ল্যাটফর্মের জন্য একটি গেমিং অ্যাপ্লিকেশন। এটিকে আরও ইন্টারেক্টিভ ডিজিটাল গেমে রূপান্তর করা হবে। আসলে এটি একটি পরিবর্তনশীল ব্যবসায়িক খেলা, যেখানে একজন খেলোয়াড় তার নিজের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে, বিক্রয় বাড়ানোর মাধ্যমে পুঁজি বাড়াতে পারবে। অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ব্যবসায়িক দুনিয়ায় শীর্ষস্থানীয় পুঁজিপতি হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। গেমটি অনলাইন ও অফলাইন_ দুই মুডেই খেলা যাবে। প্রতিযোগিতা করা যাবে দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে। এ খেলার মাধ্যমে তরুণরা ব্যবসা বিষয়ে খুঁটিনাটি কৌশল শিখে যাবে।
সমকাল :এটা উন্নয়ন ও বাজারজাত করতে আর কতদিন লাগবে?
সাবিরুল :আমি আশাবাদী, চার মাসের মধ্যেই হয়ে যাবে। এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সবাই আমার চেয়েও তরুণ। তরুণরা চাইলে কোনো কাজে বেশি দিন লাগে না।
সমকাল :আপনার ‘ইন্সপায়ারিং ওয়ান মিলিয়ন’ কর্মসূচির কী খবর?
সাবিরুল :এটা গত বছর সেপ্টেম্বরেই আমরা ১০ লাখের লক্ষ্য অতিক্রম করেছি। এখন আরও বাড়ছে। গোটা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে।
সমকাল :বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে কেমন সম্ভাবনা দেখেন?
সাবিরুল :আমি খুবই সম্ভাবনা দেখি। তারা সবাই খুবই উদ্যমী, কর্মঠ ও বুদ্ধিদীপ্ত। তারা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে। এখন তাদের দরকার উদ্যোক্তা সম্পর্কিত শিক্ষা, সুষ্ঠু প্ল্যাটফর্ম, নীতি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা। এসব বিষয়ে এখনও বেশ ঘাটতি রয়েছে। কঠিন প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা অনেক উদ্ভাবনী কাজ করে থাকে।
আমি বিশ্বাস করি, উপযুক্ত পরিবেশ পেলে বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তারা এখানকার সমাজ ও অর্থনীতি পাল্টে দিতে পারবে। তারা বিশ্বকেও পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
সমকাল :আপনার পৈতৃক বাড়ি হাওরাঞ্চলে, শ্বশুরবাড়ি সুন্দরবনের কাছে। আজ খুলনা যেতেও নিশ্চয় ছোট-বড় নদী পার হয়েছেন। এসবই এখন বিপন্ন। আপনি কি পরিবেশ সুরক্ষায় তরুণদের জন্য কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারেন না?
সাবিরুল :আমি নিজে কনজারভেশনিস্ট। আমি সবুজ পছন্দ করি। বাংলাদেশের সবুজ আমাকে খুবই আকর্ষণ করে। কিন্তু সুনির্দিষ্টভাবে পরিবেশ সুরক্ষায় তরুণদের আগ্রহী করে তুলতে প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা আমি আগে ভাবিনি। আপনি আমাকে নতুন ভাবনা জোগালেন। পরিবেশ খুবই জরুরি ইস্যু। আমি বিষয়টি নিয়ে উৎসাহের সঙ্গে কাজ করব। আপনাকে ধন্যবাদ।