ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রায় ৪৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার নতুন তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১০০-তে গিয়ে দাঁড়াল। গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সাতটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং তিন প্রকল্পের ভিত্তিফলক উন্মোচন করে প্রধানমন্ত্রী। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, আমরা সেঞ্চুরি করেছি। ক্রিকেট খেলায় সেঞ্চুরি হয়; বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেও বাংলাদেশ সেঞ্চুরি করেছে। কাজেই এটা একটা বিরাট অর্জন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা, ইনশাআল্লাহ আমরা তা করে ফেলব। ভবিষ্যতে আমরা আরো বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর বিদ্যুতের সমস্যা দূর করতে প্রথমে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হয়। এখন সরকার অনেকগুলো মেগা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। সেগুলোতে একটু সময় লাগবে। বাংলাদেশে কখনো যেন আর বিদ্যুতের সমস্যা না হয়- সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শুধু বিদ্যুৎ নয়; খাদ্য নিরাপত্তা, অবকাঠামোসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ এগিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। অনেক এলাকায় অনেক প্রকল্পের কাজ চলমান আছে। সেগুলো যেন সঠিক সময়ে সঠিকভাবে হয়, সে বিষয়টা আমার মনে হয় সবারই বিশেষভাবে দেখা দরকার। তাহলে এ দেশটাকে আমরা আরো দ্রুত উন্নত করতে পারব।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা নেয়ার সময় থেকে গত সাড়ে ছয় বছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা দ্বিগুণের চেয়ে বেশি বেড়েছে। দেশের সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের (ক্যাপটিভসহ) উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে ১৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশি।
এ ছাড়া গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের কাজীর বাজার এলাকায় সুরমা নদীর ওপর নবনির্মিত কাজীর বাজার সেতু, বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ক জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ প্রকল্প ও এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শেখ হাসিনা মানিকগঞ্জ জেলার হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে নবনির্মিত নয়াকান্দি সেতুসহ কিটিংচর ও সাটুরিয়া সেতু উদ্বোধন করেন। জেলার হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে জেলা প্রশাসকের বাসভবন পর্যন্ত চারলেনে উন্নীতকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি। এ ছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কে নবনির্মিত বলভদ্র সেতুও উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া পোস্তগোলা সরকারি আধুনিক ময়দার মিল ও বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ কার্যক্রম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত জননেত্রী শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।