নবম ও দশম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণে সম্মত হয়েছে চীন। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে দুটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে চীন। বরগুনা জেলার আমতলী এবং পটুয়াখালীর গলাচিপায় এ সেতু নির্মাণ করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী এইচ ই গো হুচিংয়ের সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এর আগে আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর নবনির্মিত আচমত আলী খান ৭ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু হস্তান্তর উপলক্ষে বৈঠক করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, নবম ও দশম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণেও সম্মতি দিয়েছে চীন। সেতু দুটি নির্মিত হবে বরগুনা জেলার আমতলী এবং পটুয়াখালীর গলাচিপায়। এজন্য আমি আবারও চীনের জনগণ এবং সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি, আগামী অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট/প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরে এ প্রকল্পের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাব।
মন্ত্রী বলেন, চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী একটি প্রতিনিধিদলসহ বাংলাদেশ সফর করছেন। আমরা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় করেছি। পাশাপাশি মাদারীপুরে মোস্তফাপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়ক আড়িয়াল খাঁ নদীর উপর নবনির্মিত আচমত আলী খান বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু হস্তান্তর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। চীন বিশ্ব অর্থনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। চীনের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের এবং এ সম্পর্ক বহুমাত্রিক। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে চীন ইতোমধ্যে ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে। এর আগে দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ৬টি মৈত্রী সেতু নির্মাণ তারই ধারাবাহিকতা। এছাড়া চীনের অর্থায়নে পিরোজপুরের কচা নদীর উপর (বেকুটিয়া সেতু) অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে। এ সেতুতে অর্থায়নের জন্য আমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে চীন সরকারকে জানাচ্ছি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
মন্ত্রী বলেন, চীন আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। চীনের বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠান প্রতিযোগিতা করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সেতু নির্মাণে কাজ করছে। সম্প্রতি আমার চীন সফরকালে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে জি-টু-জি ভিত্তিতে একটি টানেল নির্মাণে আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। পাশাপাশি আজ আমি চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় সড়ক ও সেতু বিভাগের পরিকল্পনাধীন আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়ে অনুরোধ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে এঙ্প্রেসওয়ে নির্মাণ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ এবং সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভের আদলে চার লেন বিশিষ্ট এঙ্প্রেসওয়ে নির্মাণ। এছাড়া সেতু বিভাগের আওতায় ৩৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে, যমুনা নদীর তলদেশ দিয়ে একটি টানেল নির্মাণ এবং ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এঙ্প্রেসওয়ে নির্মাণে সহযোগিতা চেয়েছি। আগামী অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরে এসব প্রকল্পের বিষয়ে আমরা ইতিবাচক সাড়া পাব বলে জানান তিনি।