পার্বত্য অঞ্চলে কাজ করবে বাপেক্স

অবশেষে পাবর্ত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের কাজ করতে যাচ্ছে বাপেক্স। আন্তর্জাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে যৌথ কোম্পানি গঠনের মাধ্যমে তারা এ কাজ করবে। এ জন্য চারটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনাও করতে যাচ্ছে তারা।
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আতিকুজ্জামান মানবকণ্ঠকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যৌথভাবে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ জন্য কোম্পানিগুলোর কাছে আগ্রহপত্র পাঠানো হয়েছে। এখন তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যৌথভাবে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতে পারলে বাপেক্সের কাজের অভিজ্ঞতা বাড়বে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) সূত্র জানায়, কাজের ক্ষেত্রে বাপেক্সের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ শেয়ার রাখার শর্ত দেয়া হচ্ছে। তবে এ কাজে বিনিয়োগ কিভাবে করা হবে তা এখনো ঠিক হয়নি।
চলতি বছরের ২০ এপ্রিল ২২ নম্বর ব্লকের অধীন চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রামের পটিয়া, জলদি, কাসালং ও সীতাপাহাড়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে এক্সপ্রেস অব ইন্টারেস্ট (আগ্রহপত্র) আহ্বান করা হয়। ২৮ মে দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল। পরে সময় বাড়ানো হয়। এতে চারটি কোম্পানি আগ্রহ দেখায়। কোম্পানিগুলো হচ্ছে চীনের সিএনপিসি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, যৌথভাবে চিনের জিও-জেএডিই পেট্রোলিয়াম কর্পোরশেন ও লং উড রিসোর্সেস কনসোর্ডিয়াম, যুক্তরাষ্ট্রের আইপিআর ট্রান্স অয়েল কর্পোরেশন এবং চীনের সিটিক ইনভেস্টমেন্ট হোল্ডিং লিমিটেড। গত সোমবার তিনটি কোম্পানি তাদের প্রস্তাব জানিয়েছে। আরেকটি কোম্পানি আগামী ১৪ আগস্ট পযন্ত সময় চেয়েছে। চারটি কোম্পানির প্রস্তাব মূল্যায়নের কাজ চলছে। এরপর আর্থিক প্রস্তাব চাওয়া হবে।
২০১২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয় পেট্রোবাংলা। এ জন্য বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে অনুরোধপত্র পাঠায় তারা। ২০১৩ সালে জানুয়ারিতে রাশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত ও চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আগ্রহ দেখায়। এর মধ্যে চীনের সিনোপ্যাক সাংহাই কোম্পানির সঙ্গে দীর্ঘদিন আলোচনা করে বাপেক্স। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামে কাজ করার জন্য ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি ইউনাইটেড মেরিডিয়ান কর্পোরেশনের (ইউএমসি) সঙ্গে চুক্তি করা হয়। পরে তারা এ ক্ষেত্রটি আরেক কোম্পানি ওশেন এনার্জির কাছে হস্তান্তর করে। শেষ পর্যন্ত কোনো কোম্পানি অনুসন্ধান কাজ করেনি। এরপর ২০০৬ সালে ব্লকটিতে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়া হয় বাপেক্সকে।
গ্যাস সংকটের কথা বিবেচনা করে সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে দেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ রয়েছে ১৪ দশমিক ৩২ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। আর গ্যাসের বার্ষিক চাহিদা প্রায় এক টিসিএফ (ট্রিলিয়ন ঘনফুট)। কিন্তু বর্তমানে যে প্রক্রিয়ায় গ্যাস উত্তোলন ও বিতরণ করা হয় তাতে বার্ষিক ঘাটতি থাকে অন্তত এক হাজার ৮২৫ কোটি ঘনফুট।