দেশের ৪৮৭ উপজেলায় একযোগে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫

দৈনন্দিন জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ ইন্টারনেটের প্রচার, প্রসার ও এর সুফলগুলো সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে দেশব্যাপী আয়োজন করা হচ্ছে ইন্টারনেট উত্সব ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫’। দেশের তিনটি বিভাগীয় শহরে বড় প্রদর্শনী ও ৪৮৭টি উপজেলায় একটি করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে আয়োজিত হবে এ উত্সব। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়। আগামী ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর হতে যাওয়া এ উত্সবের আয়োজন করছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), গ্রামীণফোন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।

বেসিস সভাপতি শামীম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি। বক্তব্য রাখেন গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫-এর আহ্বায়ক রাসেল টি আহমেদ। এছাড়া বেসিস, গ্রামীণফোন ও আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি বছর এক কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে ‘বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫’। বড় তিনটি এক্সপোসহ দেশের ৪৮৭টি উপজেলায় একযোগে পালিত হবে দেশের সবচেয়ে বড় এ ইন্টারনেট উত্সব। এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স কোম্পানি, মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান, ওয়েবপোর্টাল, ডিভাইস কোম্পানিসহ ইন্টারনেটভিত্তিক পণ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।

অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার দেশের ইন্টারনেটের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণের দোরগোড়ায় তথ্যপ্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিতে ২০১৮ সাল নাগাদ প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এছাড়া ইন্টারনেট ব্র্যান্ডউইডথের দাম তুলনামূলকভাবে অনেক সাশ্রয়ী করা হয়েছে। বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের মাধ্যমে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে। বিশ্বে একসঙ্গে প্রায় ৪৮৭ জায়গায় এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের নজির এখনো নেই।

বেসিস সভাপতি শামীম আহসান বলেন, সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। তারই ধারাবাহিকতায় দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথম ৪৮৭টি উপজেলায় একযোগে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক আয়োজন করা হচ্ছে।

গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান জানান, বেসিসের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ ভিশন ও গ্রামীণফোনের ‘ইন্টারনেট ফর অল’ প্রোগ্রামের অন্যতম লক্ষ্য সারা দেশে পাঁচ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তৈরিতে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইক ২০১৫-এর আহ্বায়ক রাসেল টি আহমেদ বলেন, আগামী ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর হতে যাওয়া এ উত্সবে অংশ নেবে ই-কমার্স, ওয়েবপোর্টাল, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ও সারা দেশের স্থানীয় মোবাইলভিত্তিক উদ্যোগ। সপ্তাহজুড়ে এসব উদ্যোগ প্রচার ও প্রদর্শন করা হবে। দর্শনার্থীরা এসব সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়া সরাসরি দেখতে ও জানতে পারবেন।

আয়োজকরা জানান, ইন্টারনেট উত্সবের অংশ হিসেবে প্রায় অর্ধশত বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার এবং দেশের গণমাধ্যমগুলোয় অন্তত সাতটি পলিসি বৈঠকের আয়োজন করা হবে। আর এর মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রবৃদ্ধির হার বাড়িয়ে প্রতি বছর ন্যূনতম ১ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক বাড়ানো, সাধারণ জনগণকে আরো বেশি অনলাইন সেবার আওতায় আনাসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেটভিত্তিক উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিতকল্পে এগিয়ে যাওয়াও এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বনানী মাঠে, ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর নানকিন বাজারে ও ১১ সেপ্টেম্বর সিলেটের সিটি ইনডোর স্টেডিয়ামে বড় পরিসরে বাংলাদেশ ইন্টারনেট উইকের আয়োজন করা হবে। এছাড়া ৫ থেকে ১১ সেপ্টেম্বর দেশের ৪৮৭টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে একযোগে এ উত্সব পালিত হবে।