শত কোটি টাকার কর ফাঁকিতে সহায়তায় কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

জালিয়াতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার ভুয়া সম্পদ তৈরি করে আয়কর ফাঁকিতে সহায়তার দায়ে ঢাকার একজন সহকারী কর কমিশনারকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স সেলের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সোমবার জাহিদুল ইসলাম নামের এই কর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ।
এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, ঢাকার কর অঞ্চল-৫ এর কর সার্কেল ১০৩-এ কর্মরত সহকারী কর কমিশনার জাহিদুল ইসলাম ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক করদাতাদের অসংখ্য কর নথিতে পেছনের তারিখে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অর্থসম্পদকে অবৈধভাবে বৈধতা দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরেই মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তিনি এই অপকর্ম করে এলেও শীর্ষ কর্তাদের যোগসাজশ থাকায় এতদিন তিনি ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। শুধু তাই নয়, দুর্নীতি দমন কমিশনে তদন্তাধীন অনেক করদাতার নথিতেও পুরনো করবর্ষে জালিয়াতির মাধ্যমে তার প্রত্যক্ষ যোগসাজশে আয়কর রিটার্নে সম্পদ দেখিয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্ন কর অঞ্চল বা ঢাকার বাইরের করদাতাদেরও তিনি কর অঞ্চল ৫-এর আওতায় এনে রিটার্ন দাখিলে সহায়তা করেছেন। এভাবে অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা ঘুষের একটি বড় অংশ সংশ্লিষ্ট যুগ্ম কর কমিশনার এবং কমিশনারকেও দেয়া হতো বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রমতে সিআইসির একটি তদন্ত দল জাহিদুল ইসলামের কর্মস্থলে তার রুমে অকস্মাৎ তল্লাশি চালায়। এ সময় তার ড্রয়ারে এবং রুমে অসংখ্য করনথির ছায়াকপি পাওয়া যায়। সিআইসির তদন্তে দেখা গেছে, কমপক্ষে ৭৬টি আয়কর নথিতে অধিক্ষেত্র বহির্ভূতভাবে এই কর্মকর্তা প্রতিজন করদাতার নামে ৩০ থেকে ৬০ কোটি টাকার সম্পদ সৃষ্টি করে বৈধতা দিয়েছেন। এভাবে প্রাথমিকভাবে উদঘাটিত ৭৬টি নথিতে এই কর্মকর্তার যোগসাজশে কমপক্ষে ৪শ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। এতে সরকার বিপুল অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং দুর্নীতিবাজ অনেক ব্যক্তি অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদকে বৈধ দেখিয়ে দুর্নীতির মামলা থেকেও পার পেয়ে গেছেন। একই ধরনের অভিযোগে একই কর অঞ্চলের কর সার্কেল ১০৮-এরও কিছু আয়কর নথি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।