পড়তে এলাম বাংলাদেশে

আলিসান, সেরেনা ও স্কেইসি যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছেন বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। এখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি ও কাজ করতে গিয়ে শিখেছেন বাংলা বেশ কিছু শব্দ—তুমি কেমন আছ, দাম কত, খুব মজা, নাম কী। এসব বলতে বলতে হেসে কুটি কুটি তিনজনেই।
তাঁরা তিনজনই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস প্রদেশের টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পড়ছেন কামিংস ভেটেরিনারি স্কুলের ভেটেরিনারি মেডিসিন বিষয়ে। বাংলাদেশের সঙ্গে শিক্ষাবিনিময় কার্যক্রমের আওতায় দুই মাসের জন্য তাঁরা এসেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েসেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১ আগস্ট ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয় এই তিন শিক্ষার্থীর সঙ্গে। আড্ডার শুরুতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ। মুখ খুললেন সেরেনা, ‘আমি এর আগে এশিয়ার ফিলিপাইন ও চীন ভ্রমণ করেছি। বাংলাদেশে প্রথম। আসার আগে খানিকটা চিন্তা ছিল কীভাবে কী করব। কিন্তু এখানকার মানুষের আতিথেয়তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত। আর এখানকার প্রকৃতি তো অসাধারণ।’
সেরেনার কথার সূত্র ধরে এগোলেন আলিসান। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম আসা এই তরুণী বললেন, ‘ অল্প সময়ে আমরা বাংলাদেশকে যেটুকু দেখেছি, তাতে আমি মুগ্ধ। বিশেষ করে ঈদ ও বিয়ের অনুষ্ঠানে খুব মজা করেছি। বিরিয়ানি ও পায়েস খেয়েছি। এখানকার মানুষের পোশাক খুব সুন্দর।’
স্কেইসির ভালো লেগেছে চট্টগ্রামের পাহাড়-নদী। এই তরুণ বেড়িয়েছেন পানি ও পাহাড়ঘেরা ফয়’স লেকে। আরও একটি ভালো লাগা ছিল স্কেইসির—ঝাল খাবার। ভাঙা বাংলায় বললেন, ‘খাবার খুব মজা!’
এবার পড়াশোনা। সেরেনা এখানে কাজ করেছেন সদ্যোজাত বাছুরের রোটা ভাইরাস ও প্রাণীদের ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ে। আলিসানের ক্ষেত্র ছিল ব্রয়লার মুরগিতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে মানবদেহে এর সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া। স্কেইসি কাজ করেছেন মুরগির ইনফ্লুয়েঞ্জা ও বার্ড ফ্লু নিয়ে। তাঁরা বিভিন্ন খামার ও বাজার ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন ফ্যাকাল্টির ডিন ও এই প্রোগ্রামের সমন্বয়ক অধ্যাপক আহসানুল হক বলেন, ‘এই শিক্ষাবিনিময় কার্যক্রমের আওতায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগামী মাসে চারজন শিক্ষার্থী যাবে টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের কামিংস ভেটেরিনারি স্কুলের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদে। এই বিনিময় আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে।’