৩১ প্রবাসীকে রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড

বিশ্ব আর্থিক মন্দা এবং অভ্যন্তরীণ নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা ধরে রাখায় ৩১ জন্য প্রবাসী ও অনিবাসীকে রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৪ প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিবিটিএ’র কার্যালয়ে এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান। এ সময় অন্যদের মধ্যে ডেপুটি গভর্নর এসকে সূর চৌধুরীসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা প্রবাসী ও অনিবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতি এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যেই এ সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ এবং বন্ডে বিনিয়োগের জন্য ৩১ জন প্রবাসী ও অনিবাসী বাংলাদেশিকে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ বৈধ চ্যানেলে সহজ, নিশ্চিত ও দ্রুততম সময়ে পেঁৗছে দিতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক ও মানি রেমিটার প্রতিষ্ঠানের অবদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এসব প্রতিষ্ঠানের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে দুইটি এঙ্চেঞ্জ হাউজকেও অ্যাওয়ার্ড প্রদানের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে গভর্নর বলেন, আমাদের রেমিটেন্স আয়ের অধিকাংশই আসে অদক্ষ নিম্ন আয়ের প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে। তাই বলা যায়, বুদ্ধিভিত্তিক শ্রম নয় বরং শারীরিক শ্রমের বলেই এই অর্জন। দক্ষ ও উচ্চশিক্ষিত বাংলাদেশি পেশাজীবীরা তাদের দক্ষতা দেশে কাজে লাগাতে পারছেন না বলে এদের বড় একটি অংশ দেশের বাইরে থেকে অর্থ উপার্জন করছেন। দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিকদের পাঠানো এ অর্থ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। রেমিটেন্স প্রবাহের ফলে স্থানীয় চাহিদা বেড়ে চলেছে। ফলে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতাও বাড়ছে। প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রার বেশিরভাগ অংশই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জমি-জমা ক্রয়, দৈনন্দিন খরচ প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগ হতো। এখন অনেক ক্ষেত্রেই, বিশেষ করে গ্রামে, বৈদেশিক মুদ্রার একটি অংশ কৃষি খামার, মৎস্য খামার, পোল্ট্রি ও ক্ষুদ্র শিল্পসহ বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। ফলে সমৃদ্ধ হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি।
উল্লেখ্য, প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্স আহরণে বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বে সপ্তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ দেশের জিডিপির ৬ শতাংশ এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের ৬০ শতাংশের বেশি। গত ছয় অর্থবছরের তথ্য থেকে দেখা যায় ক্রমবর্ধমানহারে বেড়েছে এই রেমিটেন্স আয়। এর মধ্যে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে আগের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে ১৫.৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। রেমিটেন্সের সিংহভাগই আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে। গত কয়েক বছর থেকে রেমিটেন্স প্রেরণের দিক থেকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরেই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান।