রিজার্ভ ফের ২৫ বিলিয়ন ডলারে

ঈদকে সামনে রেখে রেমিট্যান্স এবং রফতানি আয় বৃদ্ধির প্রভাব

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধের কারণে কমে গেলেও ঈদ সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এক সপ্তাহেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের ২৫ বিলিয়ন (দুই হাজার ৫০০ কোটি) ডলার অতিক্রম করেছে। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে গত ২৫ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারের ‘ঘর’ পেরিয়েছিল। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে আকুর বিল পরিশোধের পর তা কমে যায়।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, ঈদ সামনে রেখে প্রবাসীরা বেশি টাকা দেশে পাঠানোয় গত কয়েক দিনে রিজার্ভ বেড়ে ফের ২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলারে। এই অর্থ দিয়ে সাত মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব বলে জানান তিনি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুদ থাকতে হয়। বাংলাদেশকে দুই মাস পরপর পরিশোধ করতে হয় আকুর বিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের এই রিজার্ভ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম অবস্থানে থাকা রয়েছে ভারত। আর তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৬ ফেব্র“য়ারি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রিজার্ভ ২৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। মার্চের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) জানুয়ারি-ফেব্র“য়ারি মেয়াদের ১০১ কোটি ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর তা ২২ বিলিয়ন ডলারে নেমে এলেও ৩০ মার্চ তা ফের ২৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এরপর ২৯ এপ্রিল ২৪ মিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন। মাঝখানে কিছুটা কমলেও সব রেকর্ড ভেঙে গত ২৫ জুন তা আবার ২৫ বিলিয়ন ডলারের কোঠা ছাড়িয়ে যায়। আকুর মে-জুন মেয়াদের বিল জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধ করার পরও গতকাল তা আবার আগের অবস্থায় অর্থাৎ ২৫ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে।
এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রবাসী বাঙালীরা রেমিট্যান্স এসেছে ৫০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা সপ্তাহের হিসাবে সর্বোচ্চ। এর আগে কখনোই এক সপ্তাহে এতো পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে আসেনি। আর জুন মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৫৫ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে, গেল ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা এক হাজার ৫৩১ কোটি (১৫ দশমিক ৩১ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। এই অংক আগের অর্থবছরের চেয়ে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরের রপ্তানি আয় বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।