লেনদেন ও সূচকে চাঙ্গা উভয় পুঁজিবাজার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক ঃ গত সপ্তাহজুড়ে বেশিরভাগ দিনই চাঙ্গা ছিল পুঁজিবাজার। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে (ডিএসই) বেড়েছে সব ধরনের সূচক, মূলধন ও লেনদেন হওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর। অর্থবছরের প্রথমদিন বুধবার বন্ধ ছিল শেয়ারবাজার। ফলে গেল সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এরপরও সপ্তাহের ব্যবধানে টাকার অঙ্কে লেনদেন বেড়েছে ৪২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বা দুই দশমিক ৩১ শতাংশ। দেশের অপরবাজার চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জেও (সিএসই) একই চিত্র।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে চারদিনের মধ্যে অর্থবছরের প্রথম কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দরপতন হয়েছে বাকি তিন দিন ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারবাজার। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএঙ্ বেড়েছে ১১৭ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৬৩ শতাংশ। ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৫৭ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আর শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ২৮ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৬৩ শতাংশ।
গত সপ্তাহে চারদিনে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৮৮৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৫৩ টাকার। আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪২ কোটি ৬৫ লাখ ২৬ হাজার ২৫ টাকা বা দুই দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহের লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৮৪২ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজার ৬২৮ টাকার।
গেল সপ্তাহে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে। ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৯টির, কমেছে ৭২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। আর লেনদেন হয়নি একটি কোম্পানির শেয়ার।
সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই দশমিক ৪০ শতাংশ। আর সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) দুই দশমিক ৮৯ শতাংশ বেড়ে ১৫ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ২ দশমিক ২১ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে দশমিক ৮৯ শতাংশ।
এদিকে, ডিএসই ব্রড ইনডেঙ্ বা ডিএসইএঙ্ সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বা ১১৭ দশমিক ৩০ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ বা ৫৭ দশমিক ২৫ পয়েন্ট। অপরদিকে শরিয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বা ২৩ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩২৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৯টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ৭২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টির। আর লেনদেন হয়নি ১টি কোম্পানির শেয়ার।
সমাপ্ত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে (ডিএসই) দর পতনের শীর্ষে অবস্থান করছে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি)। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দর ২৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমেছে। ঢাকা স্টক একচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বিদায়ী সপ্তাহে প্রতিদিন এই কোম্পানির ৪৩ লাখ ৯ হাজার ২৫০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরোসপ্তাহে ১ কোটি ৭২ লাখ ৩৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দর পতনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিঙ্ড ইনকাম ফান্ড। আলোচিত সপ্তাহে এই কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দর ১৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমেছে। গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর পুরোসপ্তাহে কোম্পানিটির ৭ লাখ ৮২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
শীর্ষ দর পতনের তৃতীয় স্থানে থাকা এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। এই কোম্পানিটি প্রতিদিন ৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। আর পুরোসপ্তাহে কোম্পানিটির ৩৫ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানির মধ্যে মুন্নু সিরামিকের ১০ শতাংশ, প্রগ্রেসিভ লাইফের ৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ, স্যালভো কেমিক্যালের ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ , লিগ্যাসি ফুটওয়্যারের ৫ দশমিক ১১ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ, আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং আল-হাজ্ব টেঙ্টাইলের ৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ শেয়ার দর কমেছে। অন্যদিকে গেল সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এঙ্চেঞ্জ (সিএসই) সিএএসপিআই সূচক বেড়েছে দুই দশমিক ৭৮ শতাংশ। সিএসই৩০ সূচক বেড়েছে দুই দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর সিএসইএঙ্ সূচক বেড়েছে দুই দশমিক ৭১ শতাংশ।
সপ্তাহে সিএসইতে গড়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৭৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০৫টির, কমেছে ৫৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭টির। টাকার অঙ্কে লেনদেন হয়েছে ১৮১ কোটি ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৭৯৮ টাকা। যা গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহের তুলনায় ২৯ কোটি ৪৪ লাখ ৫ হাজার ১৮০ টাকা বেশি।