নতুন সম্ভাবনায় পথ চলবে উপকূলের অর্থনীতি

নতুন সম্ভাবনায় পথ চলতে যাচ্ছে উপকূলীয় অর্থনীতি। সম্ভাবনার এই নতুন দুয়ার খুলতে যাচ্ছে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কল্যাণে। দেশের তৃতীয় এই সমুদ্রবন্দরে প্রথম পর্যায়ের জাহাজ থেকে মালামাল খালাস কার্যক্রম শুরু হবে ডিসেম্বরে। তবে সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর পায়রা বন্দরের নির্মাণকাজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরই মধ্যে এ সমুদ্রবন্দরে টাওয়ার, লাইট, বয়া স্থাপনসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলছে দ্রুতগতিতে। ৬ হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠবে এই সমুদ্রবন্দর। এ বন্দরকে ঘিরে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। তাছাড়া পায়রা বন্দরকে ঘিরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারি এবং বেসরকারি কনটেইনার ডিপো, শিল্প এলাকা, ইপিজেড, আইজেড ইত্যাদি গড়ে তোলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রামনাবাদ নদীর তীরে ২৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য পায়রা সমুদ্র বন্দরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি জেটি ও বসানো হয়েছে দুটি শক্তিশালী ক্রেন। এ জেটির সঙ্গে একটি সংযোগ সেতুও নির্মাণ করা হয়েছে। রামনাবাদ নদীবন্দরকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে প্রায় ১ হাজার মিটার নদীরক্ষা বাঁধ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। বন্দরে নির্বিঘ্নে রাতেও কর্ম সম্পাদনের জন্য ৭০টি সৌর বিদ্যুৎ স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে সিগন্যাল বাতি। বন্দরে ভারি যন্ত্রপাতি পরিচালনার জন্য ক্রয় করা হয়েছে দুটি উচ্চক্ষমতাসমপন্ন জেনারেটর। এছাড়া কলাপাড়ার ধানখালীতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যু কেন্দ্র। এই সমুদ্রবন্দরের জন্য মোট ৬ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করা শুরু হয়েছে। পায়রা বন্দরে জাহাজ নোঙর করতে মোট ১৬টি জেটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বড় বড় জাহাজ বন্দরে প্রবেশ করার জন্য ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম আগামী বছর শুরু করা হবে।

এসব বিষয়ে মেঘা প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন মোঃ সাঈদুর রহমান জানান, পায়রা বন্দরের কার্যক্রম ডিসেম্বরে শুরু হবে। প্রথমে জাহাজগুলো নদীর মধ্যে নোঙর করা হবে। সেখান থেকে মালামাল খালাস করা হবে। এজন্য যেসব কার্যক্রম শেষ করা দরকার তার অনেকটাই শেষ হয়েছে। ক্যাপ্টেন মো. সাঈদুর রহমান আরও জানান, ৬ হাজার একর জায়গার ওপর গড়ে উঠবে সমগ্র পায়রা সমুদ্রবন্দর। তাছাড়া বিপুল পরিমাণ ব্যবহারযোগ্য জায়গা পড়ে আছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। এসব জায়গায় সরকারি এবং বেসরকারি কনটেইনার ডিপো, শিল্প এলাকা, ইপিজেড, আইজেড ইত্যাদি গড়ে তোলা সম্ভব। এ বন্দরকে ঘিরে সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি জানান, মাদার ভ্যাসেলকে বহির্নোঙরে রেখে লাইটার জাহাজে এ বন্দর দিয়ে পণ্য ওঠানামা করা যাবে। এ বন্দর এলাকা এঙ্ক্লুসিভ জোনে পরিণত হবে। এই সমুদ্রবন্দরের পাশে স্থাপিত স্বয়ংসমপূর্ণ ও আধুনিক নৌঘাঁটিতে নৌকমান্ডো, অ্যাভিয়েশন, জাহাজ ও সাবমেরিন বার্থিং, ভিএইচএফ যোগাযোগ সুবিধা থাকবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান বলেন, এ বছরের শেষের দিকে দক্ষিণের পর্যটন ও অর্থনীতি নতুন সম্ভাবনায় পথ চলবে।