মংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ তিন দেশের

বাংলাদেশের তিন প্রতিবেশী ভারত, নেপাল ও ভুটান মংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এতে বছরে বাংলাদেশের আয় বাড়তে পারে ৬০ কোটি টাকা। নেপাল ও ভুটান আমদানি-রফতানির জন্য কলকাতার হলদিয়ার পরিবর্তে মংলা বন্দর ব্যবহার করবে। আর হলদিয়ার পণ্য জট এড়াতে ভারতও এ বন্দর ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে। ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরকালে এ বন্দর ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। নেপাল ও ভুটান এখন আমদানি-রফতানির জন্য হলদিয়া বন্দরের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে প্রায়ই তৈরি হয় পণ্যজট। এ কারণে দেশ দুটি বিকল্প হিসেবে মংলা বন্দর ব্যবহার করতে আগ্রহ দেখিয়েছে। পদ্মার ওপর লালন শাহ সেতু এবং খুলনার রূপসা নদীর ওপর পীর খানজাহান আলী সেতু নির্মাণের কারণে ভূমিবেষ্টিত এই দুই দেশের জন্য এ বন্দর ব্যবহার অনেক সহজ হয়েছে। সুন্দরবনের অদূরে এ বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে নেপাল ও ভুটান কম খরচে বহির্বিশ্বে আমদানি-রফতানির সুযোগ পেতে পারে। এতে বাংলাদেশ মাশুল বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে।

২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গিয়ে ভারতকে বাংলাদেশের দুটি বন্দর ব্যবহারের অনুমোদন দিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেন। একইসঙ্গে নেপাল ও ভুটানকে বন্দর দুটি ব্যবহারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (অপারেশন) মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, গেল অর্থবছরে বন্দরে আয় হয় ১৫৫ কোটি টাকা। খরচ বাদে নিট লাভের পরিমাণ ৫৩ কোটি টাকা। তার দেয়া তথ্য মতে, নেপাল, ভুটান ও ভারত মংলা বন্দর ব্যবহার করলে বছরে আয় বাড়বে ৬০ কোটি টাকা। এ বন্দরে উল্লিখিত তিন দেশে পণ্য আমদানি-রফতানির জন্য প্রয়োজনীয় কার্গো ও ভেসেল রয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের ট্রাফিক ম্যানেজার কাজী গোলাম মুক্তাদির জানান, একসঙ্গে ৩৩টি জাহাজ ভেড়ার সুবিধা রয়েছে। এছাড়া চারটি ট্রানজিট শিট ও দুটি ওয়্যারহাউস রয়েছে। সেখানে ৬০ হাজার মেট্রিক টন মালামাল রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। তিনটি কনটেইনার ইয়ার্ড ও গাড়ি ইয়ার্ডে ২ হাজার গাড়ি রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। তার দেয়া তথ্য মতে, গেল অর্থবছরে এ বন্দরে ৩৫ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন এবং চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে ৩৬ লাখ ৮১ হাজার মেট্রিক টন মালামাল ওঠানামা করেছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নেপাল মংলা বন্দর ব্যবহার করেছিল।

– See more at: http://www.alokitobangladesh.com/first-page/2015/06/17/141215#sthash.3rgA6Wz4.dpuf