যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছ থেকে সন্ত্রাস দমনের কৌশল জানতে চেয়েছে

বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছ থেকে কৌশল জানতে চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, সন্ত্রাস দমনে বিভিন্ন দেশের কাছে বাংলাদেশ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনীতি বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শেরমান আজ সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও সুযোগ্য নেতৃত্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের সাফল্যের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যে কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তার ভূমি ব্যবহার করতে না দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসীকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখি। তাদের কোন সীমানা এবং অঞ্চল নেই। তিনি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিকভাবে অবৈধ অস্ত্রের চোরাচালান বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিশওয়াল, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। আন্ডার সেক্রেটারী শেরমান ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মূল্য বৃদ্ধি করতে মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারীর প্রতি আহ্বান জানান। সম্প্রতি নেপালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের কথা উল্লেখ করে শেরমান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষ করে ভূমিকম্প মোকাবেলায় আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। প্রধানমন্ত্রী মার্কিন কর্মকর্তাকে জানান, নেপালের ত্রাণ তৎপরতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের বিমান বন্দর বিশেষ সৈয়দপুর বিমান বন্দর এবং লালমনিরহাট বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে শেরমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। তবে সরকার সবসময়ই পরবর্তী নির্বাচন ভালভাবে আয়োজনের চেষ্টা করে। বাংলাদেশ নির্বাচন ব্যবস্থা উন্নয়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর সামরিক শাসকরা দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশ এখন সে অবস্থা থেকে অনেকাংশ বেরিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, নির্বাচনে কিছু ছোটখাটো অনিয়ম হলেও কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এটি খুবই ইতিবাচক দিক। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সহজে ও দ্রুত ভোট গ্রহণ এবং গণনায় স্বচ্ছতা আনতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) চালুর কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রশংসা করে শেরমান একদিন বাংলাদেশের ইভিএম ব্যবস্থা চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্যই বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। শেরমান বিএনপির নির্বাচন বর্জনকে খুবই দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন।