ব্যাক্টেরিয়া সনাক্তে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন বাকৃবি শিক্ষকের

আমাদের চারপাশে হাজারও রকমের ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে আছে। এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে অন্য ব্যাক্টেরিয়ার বৈশিষ্ট্যের রয়েছে ব্যাপক পার্থক্য। তাই বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়া শনাক্তকরণও অনেক ব্যয়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সম্প্রতি মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণিদেহের জন্য ক্ষতিকারক ‘ক্যাম্পাইলোব্যাকটার’ ব্যাক্টেরিয়া শনাক্তকরণে একটি সহজলভ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এস এম লুত্ফুল কবির। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘মাইক্রো অ্যারোফিলিক গ্যাস চেম্বার’ নামক প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব স্বল্প খরচে ওই ব্যাক্টেরিয়া শনাক্ত করতে পেরেছেন তিনি। এ ব্যাপারে ‘জার্নাল অফ এগ্রিকালচার এন্ড ফুড টেকনোলজি’ নামক আন্তর্জাতিক জার্নালে তার গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।

ড. লুত্ফুল কবির জানান, ‘ক্যাম্পাইলোব্যাকটার’ একটি গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়া। এ প্রজাতির ব্যাক্টেরিয়া জন্মাতে ‘মাইক্রো অ্যারোফিলিক কন্ডিশনে’র (যেখানে ১৫ ভাগ করে নাইট্রোজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইড বিদ্যমান) দরকার হয়। প্রচলিত পদ্ধতিতে ‘ক্যাম্পাইলোব্যাকটারে’র কলোনি শনাক্তকরতে যে প্রযুক্তিটি ব্যবহার করা হয় তার মূল্য ৭০ হাজার টাকা। পক্ষান্তরে তার উদ্ভাবিত ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করলে ব্যাক্টেরিয়া শনাক্তকরণে খরচ হবে মাত্র ১২০ টাকা। তিনি তার উদ্ভাবিত প্রযুুক্তি ও প্রচলিত প্রযুক্তি পাশাপাশি ব্যবহার করে এই ফলাফল লক্ষ্য করেছেন।

গবেষক ড. লুত্ফুল আরো জানান, ‘ক্যাম্পাইলোব্যাকটার’ মানুষের ডায়রিয়া এবং ‘গুয়লান বারি সিন্ড্রম’ নামক রোগ সৃষ্টি করে। এছাড়া ওই ব্যাকটেরিয়া গাভী ও ভেড়ার গর্ভপাত ঘটানোর জন্য দায়ী। শুধু তাই নয়, মুরগিসহ অন্যান্য গৃহপালিত পশু-পাখির রোগ সৃষ্টি করে; যা মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। তিনি বাজারে প্রাপ্ত পোলট্রি মুরগি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা কাজটি সম্পাদন করেছেন। তবে অন্যান্য জাতের মুরগি, প্রাণি, খাদ্যদ্রব্যসহ মানুষের ডায়রিয়ার নমুনা থেকেও ব্যাকটেরিয়া শনাক্তকরণে ডিভাইসটি ব্যবহার করা যাবে বলে তিনি জানান।