বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা শেফায়েত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজ দুটি শুক্রবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
তিনি বলেন, “আগামী ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের অভ্যন্তরীণ সেবা সম্প্রসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।”
ভাড়ায় আনা উড়োজাহাজ দুটি ওইদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানের বহরে যুক্ত হবে এবং পরদিন থেকে ফ্লাইট শুরু করবে বলে বিমানের কর্মকর্তারা জানান।
মিশরের স্মার্ট এয়ার থেকে ‘ড্রাই লিজ’ পদ্ধতিতে আনা ৭৪ আসনের এই টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজ দুটি আগামী পাঁচ বছর বিমানের বহরে যুক্ত থাকবে।
সাধারণত দুই পদ্ধতিতে উড়োজাহাজ ভাড়া নেওয়া হয়। দীর্ঘ মেয়াদের ইজারাকে বলা হয় ড্রাই লিজ, আর স্বল্প মেয়াদে হলে ওয়েট লিজ।
ড্রাই লিজ পদ্ধতিতে যে প্রতিষ্ঠান ভাড়া নিচ্ছে তারাই উড়োজাহাজটি নিজস্ব ক্রু দিয়ে পরিচালনা করে। রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও ইজারাগ্রহিতা প্রতিষ্ঠানের। আর ওয়েট লিজ পদ্ধতিতে বিমানের ক্রু ও রক্ষণাবেক্ষণ দুটোই থাকে ইজারদাতা প্রতিষ্ঠানের হাতে।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাইল হেউড এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, বন্ধ থাকা অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে ফ্লাইট চালু করতেই উড়োজাহাজ দুটি আনা হয়েছে।
দুটি ড্যাশ-৮ নিয়ে বিমানের বহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১২টিতে। এর মধ্যে চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, দুটি এয়ারবাস এ ৩১০, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর এবং দুটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজ।
উড়োজাহাজের অভাবে কয়েক বছর ধরে বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটগুলো বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১১ সালে ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত বছরের নভেম্বরে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েও তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হন বিমানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেভিন স্টিল।
উড়োজাহাজ ভাড়া করতে গত বছর থেকে বিভিন্ন সময়ে পাঁচবার দরপত্র ডেকেও সাড়া পায়নি রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে ঢাকা থেকে সিলেট ও চট্টগ্রামের পথে বিমান যাত্রী পরিবহন করলেও এসব ফ্লাইট চালানো হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের সংযোগ হিসেবে।
বিমান কর্মকর্তারা জানান, স্বল্প দূরত্বে ফ্লাইট চালানোর জন্য ড্যাশ-৮, এটিআর-৭২ এর মতো টার্বো-প্রপেলার উড়োজাহাজগুলো বেশি উপযোগী। রক্ষণাবেক্ষণ ও জ্বালানি খরচ কম হওয়ায় এসব উড়োজাহাজ অর্থনৈতিকভাবেও বেশি লাভজনক।
বাংলাদেশের চারটি বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, নভো এয়ার এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চালালেও টিকিটের মূল্য ও সেবার মান নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষ রয়েছে।