বাংলাদেশের বৃহত্তম সংরক্ষিত বনাঞ্চল সুন্দরবনে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। সরকারের মালিকানাধীন টেলিটক কোম্পানি বনের বিভিন্ন স্থানে ১১টি মোবাইল ফোন টাওয়ার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নেটওয়ার্ক চালুর ফলে বন প্রশাসন পরিচালনা, জেলেদের মত্স্য আহরণ, মংলা বন্দর ব্যবহারকারী সমুদ্রগামী জাহাজের ক্রুদের কাজ এবং নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ডের নিরাপত্তা সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। ইতিমধ্যে পূর্ব সুন্দরবনের টাইগার পয়েন্টের পর্যটন স্পট কটকা ও মত্স্য আহরণ এলাকা দুবলার চরের আলোরকোলে দু’টি টাওয়ারের মাধ্যমে মোবাইল ফোন সেবা প্রদান শুরু হয়েছে। বাকি টাওয়ারগুলো স্থাপিত হচ্ছে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের হিরণপয়েন্ট, পুষ্পকাঠি, দোবেকী, নটাবেকী, পূর্ব বিভাগের দুবলা অফিস কিল্লা, কোকিলমুনি, চরপুটিয়া, কঁচিখালীসহ বিভিন্ন স্থানে। সুন্দরবনের লোকালয় সংলগ্ন সীমিত এলাকায় বিভিন্ন মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে অনিয়মিতভাবে বর্তমানে নেটওয়ার্ক সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু পূর্ব সুন্দরবনের দুবলা জেলেপল্লী, পর্যটন এলাকা কটকা, হারবাড়িয়া, পশ্চিম সুন্দরবনের হিরণপয়েন্ট, মান্দারবাড়িয়া, কালিরচর, দোবেকী প্রভৃতি এলাকায় মোবাইল ফোন সুবিধা পাওয়া যেত না। বড় বড় বাঁশের উপরে এন্টিনা লাগিয়ে মাঝে মাঝে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সুবিধা নিয়ে বন বিভাগীয় কর্মী ও মত্স্য ব্যবসায়ী-জেলেরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের ডিএফও আমির হোসাইন চৌধুরী জানান, এ বনের মধ্যে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক না থাকায় অতীতে বন বিভাগ তাদের নিজস্ব বেতার সংযোগের মাধ্যমে সীমিতভাবে যোগাযোগ করে প্রশাসনিক কাজ চালাতেন। সম্প্রতি সরকারের সাথে টেলিটক কোম্পানীর সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন পয়েন্টে মোবাইল ফোন টাওয়ার স্থাপন শুরু হয়েছে। এর মাধ্যমে সুন্দরবনের প্রশাসনিক কাজ পরিচালনায় অনেক সুবিধা হবে। পশ্চিম বিভাগের ডিএফও জহির উদ্দিন জানান, সুন্দরবনের মধ্যে মোবাইল ফোন সুবিধা স্থাপিত হওয়ায় বন সংরক্ষণ, বনদস্যু ও বনজ সম্পদ পাচারকারীদের প্রতিহত করা সহজতর হবে। গুরুত্ব বিবেচনা করে মোবাইল ফোন টাওয়ার স্থাপন আরও বৃদ্ধি করা যেতে পারে। দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সুন্দরবনকে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কভুক্ত করায় দুবলার চরসহ বঙ্গোপসাগর উপকূলের কাছাকাছি মত্স্য আহরণরত জেলেরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন। রূপান্তর ইকো ট্যুরিজমের পরিচালক নাজমুল আজম ডেভিড জানান, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কের অভাবে পর্যটকরা অতীতে সুন্দরবনে বেড়াতে আসতে অনেক সময় অনীহা দেখাতেন। এখন আর নেটওয়ার্কের সমস্যা হবে না।