কৃষিকাজে প্রশিক্ষণ ও স্বল্প সার প্রয়োগে সাফল্য

নবাবগঞ্জে দৃষ্টান্ত হয়েছেন শাহজাহান

পতিত জমিতে সবিজ চাষে স্বাবলম্বী হয়েছেন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের রুপারচর গ্রামের কৃষক মো. শাহজাহান। তিনি এখন গ্রামের কৃষকদের দৃষ্টান্ত। তার পরিবার এখন গ্রামের স্বচ্ছল কৃষক পরিবার। তার এ সফলতায় কৃষিকাজে এগিয়ে আসছেন গ্রামের অনেক পরিবার, উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন কৃষিকাজে। তার এ সফলতার পিছনে উপজেলা কৃষি অফিসের অবদান রয়েছে। কৃষিবিষয়ক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সঠিক পরামর্শে সার ও কীটনাশক ব্যবহারে এ সফলতা বলে জানান কৃষক মো. শাহজাহান।

শাহজাহান জানান, পারিবারিক সূত্রে ছোটবেলা থেকে কৃষিকাজে সম্পৃক্ততা ছিল তার। চরাঞ্চল হওয়ায় উল্লেখযোগ্য ফসল উত্পাদন হতো না। সঠিক ও পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার জানা ছিল না তার। উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আকবর হোসেনের পরামর্শে কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তিনি জানান, নিজের জমি মাত্র সাড়ে ৪ বিঘা, যা বছরের বেশিরভাগ সময় পতিত থাকতো। এখন গ্রামের অন্যের জমি ভাড়া নিয়েছেন আরো সাড়ে ৫ বিঘা। প্রতি বিঘা জমি ৫ হাজার টাকা বছর চুক্তিতে। তাতে চাষ করছেন আলু, বেগুন, শিম, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ। কৃষি অফিসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে কীটনাশক ও সারের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। ফসল উত্পাদন বৃদ্ধিতে ক্ষতিকারক পোকা দমনে ব্যবহার করছেন ‘ফেরোমেন ফান্ড’ পদ্ধতি। এতে খরচ কম হচ্ছে এবং উত্পাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি লাভবান হচ্ছেন।

গত বছর তিনি ফসল উত্পাদনে ১ লাখ টাকা লাভ করেছেন। এবছর আলু থেকে ৪০ হাজার, বেগুন থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ করেছেন। এছাড়া সাড়ে ৪ বিঘায় রোপণ করা হয়েছে ভুট্টা, সাড়ে ৩ বিঘায় বেগুন, ১ বিঘায় শিম জমিতে রয়েছে। এসব থেকে আরো ৫০ হাজার টাকা আয়ের আশা করছেন শাহজাহান। এসব ফসল উঠে গেলে বর্ষা মৌসুমের জন্য রোপণ করা হবে মিষ্টি কুমড়া। সব মিলিয়ে এবছর দেড় লাখ টাকার অধিক আয় করবেন বলে আশা করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মকবুল আহমেদ বলেন, এর আগে ঐ অঞ্চলের কৃষকরা আমাদের পরামর্শ গ্রহণ না করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নতজাতের বীজ ব্যবহার, জৈব সার ও ফসল-বান্ধব কীটনাশক ব্যবহার করে শাহজাহান আজ স্বাবলম্বী। আমরা চাচ্ছি প্রত্যেক কৃষক আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করুক।