বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণে ছয় কোটি ইউরো ঋণ দেবে জার্মানি। প্রথমবারের মতো বিদ্যুৎ খাতে ঋণ দিচ্ছে দেশটি। এর আগে আর্থসামাজিক উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে অনুদান দিলেও ঋণ হিসেবে এটাই প্রথম। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার বাংলাদেশ সরকার ও জার্মানির আর্থিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা জার্মান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (কেএফডাব্লিউ) মধ্যে ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই ঋণ চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব আবুল মনসুর মো. ফয়েজ উল্লাহ এবং জার্মানির কেএফডাব্লিউর পক্ষে পরিচালক লিসা স্টেইনাচার সই করেন। অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ফার্ডিনান্ড ভন উইহি উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭২ সালে থেকে বাংলাদেশেকে সহায়তা দিয়ে আসছে জার্মানি। এ পর্যন্ত দেশটি অনুদান হিসেবে মোট ২.৪ বিলিয়ন ইউরো সহায়তা দিয়েছে। এবার বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব পাওয়ার ট্রান্সমিশন ইন দ্য ওয়েস্টার্ন জোন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ঋণ দেবে দেশটি। কেএফডাব্লিউও ছয় কোটি ইউরো আর্থিক সহায়তার মধ্যে চার কোটি ৫০ লাখ ইউরো নমনীয় শর্তে ঋণ এবং এক কোটি ৫০ লাখ ইউরো দেবে অনুদান সহায়তা হিসেবে। জার্মানের ঋণের সুদের হার প্রায় আড়াই শতাংশ।
প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নকারী সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ২৩০ কেভি এবং ১৩২ কেভি সঞ্চালন ও সাবস্টেশনের উন্নয়ন করবে। ২০১৮ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
চুক্তি সই শেষে জার্মান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বাংলাদেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশে দ্রুত এগিয়েও যাচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে জার্মানি পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, যেকোনো দেশেই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কার্বন নির্গত হয়, যা পরিবেশের জন্য হুমকি। এ কারণে পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী জার্মানি।
আবুল মনসুর মো. ফয়েজ উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২১ কোটি ১০ লাখ ইউরো সহায়তা দেবে জার্মানি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং শহরাঞ্চলে জলবায়ু অভিযোজন খাতে অর্থায়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে দেশটি।
– See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/industry-business/2014/12/16/163485#sthash.lh2t7ryS.dpuf