বান্দরবানে কমলার বাম্পার ফলন

বান্দরবানে চলতি মৌসুমে কমলার ব্যাপক ফলন হয়েছে। জেলার রুমা, থানছি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৪১ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে কমলা আবাদ হয়েছে। এসব পাহাড়ী জমিতে প্রায় প্রতি বছর ২৪ হাজার ৪শ ৯২ মেট্রিক টন কমলা উৎপাদন হচ্ছে। কমলার ভালো ফলন হলেও হিমাগারের অভাবে চাষীরা ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এবছর কমলার ভাল ফলন এবং ভালো দাম পাওয়ায় মহা খুশি কমলা চাষিরা। বর্তমানে চাষিরা কমলা বাজারে বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে। বান্দরবানের পাহাড়ে উৎপাদিত কমলা বিদেশি কমলার মত সুস্বাদু ও আকারে বড় হওয়ায় দেশব্যাপী তার চাহিদাও রয়েছে বেশি। কৃষি বিভাগের মতে, পার্বত্য এলাকার পাহাড়ের মাটি কমলা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তাছাড়াও এবছর আবহওয়া ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় কমলা ভালো ফলন হয়েছে। বান্দরবানের উৎপাদিত কমলা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। যদি পরিকল্পিতভাবে সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে কমলা চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তাহলে পার্বত্য এলাকার উৎপাদিত কমলা দেশের বাইরে রপ্তানী করা সম্ভব হবে। চলতি মৌসুমে ফলন ভলো হওয়ায় কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তবে মৌসুম হিসাবে কমলা দাম তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে বলে স্বীকার করেন স্থানীয় চাষীরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেবে মতে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় দুই হাজার ৪১ হেক্টর জমিতে কমলার আবাদ হয়েছে এবং বিপুল কমলা ধরেছে। উপজাতীয় চাষীরা স্থানীয়ভাবে পরিচর্যার মাধ্যমে দেশিজাতের কমলার চাষ করে আসছেন দীঘদিন ধরে। তবে কৃষি বিভাগের মাঠকর্মীদের আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় বাগানে কমলার ফলন বেশি পাচ্ছে চাষীরা। কমলার ফলন বেশি হওয়া ছাড়াও আকারেও বড় এবং তুলনামুলকভাবে সুস্বাদু। প্রতিহালি কমলা ৭০ টাকাহারে বিক্রি হচ্ছে খুচরাবাজারে। তবে পাইকারী বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিহালি কমলা গড়ে ৬০ টাকা হারে। জেলা ও উপজেলা সদরে কমলাসহ ফলজ সংরক্ষণে কোন হিমাগার নেই। কোন কর্তৃপক্ষই হিমাগার স্থাপনে এখনও এগিয়ে না আসায় জেলায় কমলাসহ মৌসুমী ফলমুল সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়না। ফলে প্রতিবছরই মৌসুম ভিত্তিক কোটি কোটি টাকা মুল্যের ফলজপণ্য মাঠে পচে বিনষ্ট হয়ে যায়। রুমা ও থানছি উপজেলার বেশ কয়েক জন কৃষক জানান,কমলা ফ্রিজাপ করার মতো কোন ধরনের হিমাগার নেই। ফলে এই হিমাগারের অভাবে স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত কমলার ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। এ ছাড়াও কমলা চাষে ব্যাংক ঋণের কোন সুযোগ নাই। যদি এই খাতে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে কমলা চাষ আরো বেশী এলাকায় সম্প্রসারিত হবে। এব্যপারে সরকার অথবা সংশ্লিষ্ট বিভাগ কৃষি ঋনের ব্যবস্থা থাকলে চাষিরা আরোও উৎসাইত হবে।
এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন বলেন,বান্দরবান জেলার রুমা,থানছি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় পাহাড়ে প্রচুর কমলা চাষ হয়। কৃষকরা প্রচুর শ্রমদেয়। পাহাড়ি এলাকার কমলার কোয়ালিটি খুবই ভাল। এই কমলার দাম খুব বেশি। এখানকার মাটি ও আবহওয়া কমলা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। কষকরা কমলার আবাদ বৃদ্ধি করার জন্য উৎসাহিত হচ্ছে। চলতি মৌসুমে বান্দরবানে প্রায় ২ হাজার ৪১ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে কমলা আবাদ হয়েছে। এসব পাহাড়ি জমিতে প্রায় প্রতি বছর ২৪ হাজার ৪শ ৯২ মেট্রিক টন কমলা উৎপাদন হচ্ছে।