দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)- এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আকিহিকো তানাকা বাংলাদেশ ও জাপানের সমন্বিত উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ‘আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, গার্মেন্টস শিল্পের প্রসার ও প্রাতিষ্ঠানিক শিল্পায়ন নিশ্চিত করতে পারলে বাংলাদেশ দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে।’
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক বিশেষ বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
জাইকা প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. আকিহিকো তানাকা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে জ্বালানি খাতের উন্নয়ন, কার্যকর ও যুগোপযোগী কৌশল নির্ধারণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বিগ-বি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এশিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে। এর মাধ্যমে দেশের জ্বালানি খাত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটবে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে।’
তিনি বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, শিশুমৃত্যু হার রোধ, মাতৃস্বাস্থ্য রক্ষা, যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে জাপানের নানা সহযোগিতার চিত্র তুলে ধরেন। জাইকা পরিচালিত বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতিতে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এলাকায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা, গ্রামীণ উন্নয়ন, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাপানের সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। দুই দেশের বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে।’
জাইকা প্রেসিডেন্ট মাতারবাড়ী আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল-ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট বাস্তবায়নে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সমন্বিত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের জন্য বাংলাদেশ ও জাপান সরকার ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু করেছে।’
জাপানকে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং বৃহৎ উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে অভিহিত করে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর জাপান অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সফরকালে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।’
অধিক হারে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের জাপানে উচ্চশিক্ষা বৃত্তি প্রদান এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন বৃত্তি প্রদানের আশ্বাস দেওয়ায় উপাচার্য জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
ঢাবি উপাচার্য অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। জাপান স্টাডি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. কাউসার আহাম্মদ প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
– See more at: http://www.thereport24.com/article/40520/index.html#sthash.qfuMs3FQ.dpuf