অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্যের চাহিদা ক্রমেই বাড়ছে। এতে প্রতিবছর বাড়ছে সিরামিক পণ্যের রফতানি। ইউরোপের বহু দেশে সিরামিক পণ্য রফতানি হচ্ছে এখন। কয়েক বছরের মধ্যে পণ্যটির রফতানির প্রসারতা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশীয় সিরামিক নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো কারখানা সম্প্রসারণ করছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময়ে) সিরামিক পণ্য রফতানি হয়েছে ৩ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩০ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেশি। আলোচ্য সময়ে সিরামিক রফতানি হয়ে ছিল ২ কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। এ সময়ে কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এর আগের মাস তথা জানুয়ারিতে পণ্যটির রফতানির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এ ছাড়া ডিসেম্বরে ২ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার, নবেম্বরে ১ কোটি ৯২ লাখ, অক্টোবরে ১ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার, সেপ্টেম্বরে ১ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার রফতানি হয়। ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য রফতানি হয়েছিল ৩ কোটি ৭৬ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে সিরামিক রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ডলার। তবে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশে সিরামিক শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। তবে কয়েক দশক পার না হতেই এখন এটা শিল্পে পরিণত হয়েছে। এগিয়ে এসেছে শাইনপুকুর সিরামিক, পিপলস্ সিরামিক, মুন্নু সিরামিক ও হালের ফার, আর্টিসান, প্যারাগন, গ্রেটওয়াল, আরএকে, সিবিসি, স্ট্যান্ডার্ড, বেঙ্গল ফাইনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ থেকে বেশি সিরামিক রফতানি হয় তুরস্কে। দেশটিতে রফতানি হয় ৫ কোটি ২১ লাখ ৫ হাজার ৯৩০ মার্কিন ডলার। এর পর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে সিরামিক রফতানি হয় ৫ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৫২০ লাখ ডলার। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে ৪ কোটি ৫২ লাখ ৯ হাজার ১৮ ডলার, নরওয়ে ২ কোটি ২৬ লাখ ৩ হাজার ৭১ ডলার, জার্মানি ১ কোটি ৯ লাখ ৯ হাজার ১২২ ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাত ১ কোটি ৯ লাখ ৮ হাজার ৩৮০ মার্কিন ডলার, ইতালি ১ কোটি ৯৩ লাখ ২৭৪ ডলার। তাছাড়া, অ্যাঙ্গলা, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, মিসর, স্পেন, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আয়ারল্যান্ড, ভারত, জাপান, কোরিয়া, লেবানন, ম্যাক্সিকোসহ অর্ধশতাধিক দেশে সিরামিক পণ্য রফতানি হয়।