ছয় মাসে রফতানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ

রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রফতানি আয় বেড়েছে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ শতাংশ। এদিকে একক মাস হিসেবে ডিসেম্বরে রফতানি

আয় বেড়েছে আগের ডিসেম্বরের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে মোট রফতানি আয় হয়েছে ১ হাজার ৪৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। এ আয় এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৩ শতাংশ বেশি। ইপিবি গতকাল বৃহস্পতিবার রফতানি আয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
রফতানিকারক ও উদ্যোক্তারা বলছেন, এখনও পর্যন্ত রফতানি আয় বাড়লেও আগামীতে এ ধারা আর থাকবে না। আগামী কয়েক মাসের রফতানি আয়ে সে চিত্র ফুটে উঠবে। বিজিএমইএর সহ-সভাপতি রিয়াজ বিন মাহমুদ বলেন, গত দুই মাসের ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতার পর অর্থনীতিতে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে আগামী কয়েক মাসের রফতানি আয়ে তার নেতিবাচক প্রভাব সুস্পষ্ট হবে। তখন রফতানি আয়ের এ স্বস্তিকর চিত্র আর থাকবে না। তার মতে, ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানি আয়ের যে তথ্য পাওয়া গেছে তার অর্ডার তিন চার মাস আগের। তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। গত আড়াই মাস ধরে টানা অবরোধে আমদানি-রফতানি প্রায় বন্ধ। বন্দর থেকে কারখানায় কাঁচামাল যেমন আসছে না, তেমনি রফতানি পণ্যের স্তূপ তৈরি হয়েছে কারখানায়। এ পরিস্থিতিতে পণ্য সময়মতো বুঝে না পাওয়ার শঙ্কায় ক্রেতারা রফতানি আদেশ দিচ্ছেন না।
ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে প্রধান রফতানি খাত তৈরি পোশাকের ওভেন ও নিট উভয় পণ্যের রফতানি প্রবৃদ্ধি বেশ ভালো। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি বেড়েছে উভয় খাতেই। এর মধ্যে নিট জাতীয় পণ্যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেড়েছে ১০ শতাংশেরও বেশি। এ সময় মোট আয় হয়েছে ৫৯৫ কোটি ডলার। পোশাক খাতের অপর বড় পণ্য ওভেন বা শার্ট, প্যান্ট জাতীয় পণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে আগের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ সময় এ খাতে রফতানি আয় হয়েছে ৫৯৮ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। টেরিটাওয়েলের ৪ কোটি ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
রফতানি খাতের বড় পণ্যের মধ্যে হিমায়িত খাদ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। আগের ছয় মাসের তুলনায় রফতানি বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এ খাতের বড় পণ্য চিংড়ি রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ শতাংশ। তবে হিমায়িত মাছের রফতানি কমে গেছে। এছাড়া বড় পণ্যের মধ্যে চামড়া ও চামড়াজাতীয় পণ্যের রফতানি বেড়েছে। তবে কোনো কিছুতেই দুর্দিন কাটছে না পাট ও পাটপণ্য এবং চা খাতের। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে জাহাজ রফতানি খাতও সম্ভাবনা ধরে রাখতে পারেনি। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় আর কমেছে জাহাজ রফতানিতে।