ইউনেস্কোর ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পেলো জামদানি

ভোরের কাগজ : শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৩

 ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পেলো জামদানিকাগজ প্রতিবেদক : জামদানি শাড়ির সঙ্গে পরিচয় নেই এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন। পোশাকের ক্ষেত্রে বঙ্গ ললনাদের প্রথম পছন্দ জামদানি। বিশেষ করে উৎসব-আনন্দে এই শাড়ির লোভ অনেকেই সামলাতে পারেন না। মনোমুগ্ধকর নকশা আর মিহি সুতোর বুনন জামদানিকে নিয়ে গেছে এক অনন্য উচ্চতায়। রঙ নকশা আর কারিগরদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় জামদানির কদর দিন দিন বাড়ছে। বাঙালি নারীরাই নয়, এই শাড়ি অঙ্গে তুলে নিতে আগ্রহ রয়েছে অনেক বিদেশী ললনার। নিজস্ব পোশাকের বাইরে এসে মনের আনন্দে অনেক বিদেশী নারী তাদের শরীর ঢাকেন জামদানিতে। তাই দেশের সীমানা ছাড়িয়ে জামদানি বিশ্ববাজারে স্থান করে নিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন করে নজর কাড়ছে সৌখিন মানুষদের। আর এতে এই শিল্পে আশার আলো জ্বলছে। বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন জামদানি শিল্পের সঙ্গে জড়িত শিল্পী-কারিগররা। এখন এই স্বপ্নে আরেকটি নতুনমাত্রা যুক্ত হলো। ইউনেস্কোর ঐতিহ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের জামদানি শাড়ি।ইউনেস্কোর আওতাধীন ‘বিশ্বসভ্যতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বমূলক তালিকায় স্থান পেয়েছে জামদানি। গত ৪ ডিসেম্বর আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে ইউনেস্কোর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত অষ্টম সম্মেলনে বাংলাদেশের জামদানিকে এ স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। সম্মেলনে বিশ্বের শতাধিক দেশের প্রতিনিধি তাদের প্রস্তাবসহ অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশ থেকে প্রাপ্ত ৩১টি প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন ৭টি প্রস্তাবকে চূড়ান্তভাবে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের ‘ঐতিহ্যবাহী জামদানি বুনন শিল্প’ শীর্ষক প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন লাভ করে এবং ইউনেস্কোর বিশ্বসভ্যতার স্পর্শাতীত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, জামদানি বিশেষজ্ঞ ড. ফিরোজ মাহমুদ এবং বাংলা একাডেমির পরিচালক শাহিদা খাতুন।উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সুপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্পের ইতিহাস-ঐতিহ্য বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যাবলী বাংলা একাডেমির উদ্যোগে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্যারিসে ইউনেস্কো প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া বাংলা একাডেমি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের নকশি কাঁথা, রিকশা-পেইন্টিং, বৈশাখী উৎসব ইত্যাদি বিষয়ও বিশ্বের সাংস্কৃতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করেছে।