গত অর্থবছর রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে

বর্তমান প্রতিবেদক

২০১২-১৩ অর্থবছর রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। গত অর্থবছরে মোট ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ১১ লাখ ইউএস ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে তা ছিল ১ হাজার ২৮৪ কোটি ইউএস ডলার। তবে অর্থবছরের শুরুর দিকে ভালো রেমিট্যান্স এলেও শেষদিকে তা কমেছে। বিশেষ করে গত তিন মাসে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স কমার ধারা অব্যাহত ছিল। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন রাজনৈতিক অস্থিরতায় রেমিট্যান্স প্রবাহ কমছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত অর্থবছর প্রবাসীরা মোট ১ হাজার ৪৪৬ কোটি ১১ লাখ ইউএস ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অথচ এর আগের অর্থবছরে মোট ১ হাজার ২৮৪ কোটি ইউএস ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। অর্থবছরের শেষদিকে আগের মাসগুলোর ধারাবাহিকতায় রেমিট্যান্স এলে আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২শ’ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি হতো বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত অর্থবছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে অক্টোবরে। যার পরিমাণ ছিল ১৪৫ কোটি ইউএস ডলার। আর সবচেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছিল গত মাসে। জুনে ১০৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে। এ ছাড়া গত বছরের জুলাই মাসে এসেছিল ১২০ কোটি ডলার, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে ১১৭ কোটি ডলার করে, ডিসেম্বরে ১২৮ কোটি, জানুয়ারিতে ১৩২ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ১১৬ কোটি, মার্চে ১২২ কোটি, এপ্রিলে ১১৮ কোটি আর মে মাসে এসেছে ১০৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। কিন্তু গত এপ্রিল মাস থেকে আশঙ্কাজনকভাবে দেশটির রেমিট্যান্স প্রবাহ কমতে থাকে। এপ্রিলে যেখানে ৩৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে, জুনে সে সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২১ কোটিতে। একই সময়ে কমেছে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়ার রেমিট্যান্স প্রবাহও।বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কাজী সাইদুর রহমান বলেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব চলছে। এ অবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। ব্যাংকগুলো রেমিট্যান্স আনতে না পারার অন্যতম কারণই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা আর হরতাল। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে কিছুটা মন্দাভাব চলছে। এর প্রভাবও পড়েছে প্রবাসী ভাইদের আয়ের ওপর। তবে তিনি বলেন, টাকার বিপরীতের ডলারের চাঙ্গা ভাবের কারণে চলতি বছরের প্রথম থেকেই প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে ডলারের অব্যাহতভাবে দাম কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্সের পরিমাণও কমে গেছে।