যাদের হাত পা আছে তারা বেকার নয়, এই কথা বিশ্বাস করে প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে সমাজে শুধু প্রতিষ্ঠিতই করেননি সবার কাছে মডেলে পরিণত হয়েছেন শেরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী সুঘাট ইউনিয়নের গুয়াগাছি গ্রামের আদর্শ কৃষক মো. হায়দার আলী। সবজি চাষি হায়দার আলী এ বছর ‘লাভলি’ ও ‘সফল’ জাতের টমেটো আবাদ করে অনেক লাভবান হয়েছেন।
হায়দার আলী জানান, তিনি এবছর ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রায় পৌনে দুই বিঘা জমিতে লাভলী জাতের টমেটোর চারা লাগান। গত কোরবানির ঈদের দুই সপ্তাহ পূর্ব থেকে টমেটো বিক্রি শুরু করেন। প্রতি কেজি সবোচ্চ ১শ টাকা থেকে শুরু করে বর্তমানে ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। এই জমি থেকে তিনি ৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। বাজার স্বাভাবিক থাকলে ঐ জমি থেকে আরো ৫০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন। হায়দার আলী জানান, তিনি আরো ২৫ শতাংশ জমিতে ‘সফল’ জাতের টমেটো আবাদ করেছেন। আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহে এ জাতের টমটো জমিতে লাগিয়েছিলেন। ইতি মধ্যে এ জমি থেকেও ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। বাজার দর স্বাভাবিক থাকলে এ জমি থেকে আরো দুই লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন তিনি। হায়দার আলী জানান, দুই জাতের টমেটো চাষ করতে তার মোট খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা।
সরেজমিনে গুয়াগাছি গ্রামে গিয়ে জানা যায়, হায়দার আলী ৫ বছর পূর্বেও মাত্র ২০ শতক জমির মালিক ছিলেন। এই সামান্য জমিতে চাষ করে তার সংসারে অভাব-অনটন লেগেই থাকতো। এরই মাঝে পেঁপে চাষ করার চিন্তা করেন এবং তত্কালীন কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান ও কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবদুর রহিমের পরামর্শে পেঁপে চাষ শুরু করে লাভবান হন। শুরু হয় তার ভাগ্য বদলের পালা। এরপর তিনি আরো কয়েক বিঘা জমি লীজ নিয়ে পেঁপে চাষের পাশাপাশি নানা ধরনের নানান জাতের সবজি চাষ শুরু করেন। ফলে পরিবারেও ফিরে আসে সচ্ছলতা।
হায়দার আলী ও এলাকার অন্যান্য সবজি চাষি জানান, তাদের উত্পাদিত সবজি পরিবহনের জন্য খুব কষ্ট করতে হয়। সময়মত সবজি পরিবহন করতে না পারায় অনেক সময় ন্যায্যমূল্য পাওয়া যায় না।
শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, হায়দার আলীর মতো অনেক চাষি কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শে এবার টমেটোর চাষ করে সাফল্য লাভ করেছেন। তিনি জানান, হায়দার আলী একজন মডেল চাষি। তার দেখাদেখি সুঘাট ইউনিয়নের অনেকেই টমেটোর চাষ করে সফল হয়েছে।