মাগুরা মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র থেকে চারা সংগ্রহ করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রথমবারের মত মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে উন্নত বারি-১ জাতের মরিচের চাষ করেছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত এই বারি-১ জাতের মরিচ চাষ করে কৃষকরা সাধারণ জাতে তুলনায় অধিক ফলন, অধিক মুনাফা ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন মনে করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও বারি কর্মকর্তারা।
মাগুরা মসলা গবেষণা উপকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, মাগুরায় চাষ হওয়া বারি-১ জাতের মরিচ অন্যান্য জাতের সাধারণ মরিচের চেয়ে দেড় থেকে দুইগুণ বেশি ফলন দেয়। সাধারণ জাতের মরিচে যেখানে হেক্টর প্রতি ফলন হয় সাত থেকে আট টন সেখানে বারি-১ জাতের মরিচে হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ১৫ টন।
জানা গেছে, পরিবর্তীত আবহাওয়ায় এর ফুল নষ্ট হয় না। এই জাতের মরিচ ক্ষেত্রে ফুল বেশি হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ফলন বেশি হয়। আবাদকালীন সময় অনেক বেশি পাওয়া যায় ও মরিচটি খেতে সুস্বাদু হয়। শুধু তাই নয়, এ মরিচে পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক কমে যায়। সেই সাথে এটির চাষ পদ্ধতি বেশ সহজ। এছাড়া ঝাঁঝ বেশি দাম পাওয়া যায়।
মাগুরা সদর ও শ্রীপুর উপজেলায় তিন একর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে বারি-১ জাতের মরিচ চাষ হয়েছে। সদর উপজেলার বাঁশকোটা গ্রামের কৃষক ক্ষিতিশ টিকাদার ও শ্রীপুর উপজেলার হাজরাতলা গ্রামের মলয় মন্ডল উভয় ১২ শতাংশ জমিতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় পরীক্ষামূলকভাবে বারি-১ জাতের মরিচ চাষ করেছেন। যা থেকে তারা প্রত্যেকেই ১৯ মণ করে মরিচের ফলন পাবেন বলে আশা করছেন।
মাগুরা মসলা গবেষণার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, মরিচ অন্যতম অর্থকরী ফসল হওয়ায় জেলার চাষীরা প্রতি মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করে। যা থেকে প্রতি বছর উৎপন্ন হয় পাঁচ হাজার টন মরিচ।
জেলায় চাষ হওয়া মরিচগুলো অধিকাংশ সাধারণ জাতের। বারি-১ জাতের মরিচ আবাদ করতে পারলে এই উৎপাদন আরো বাড়বে। সেই সাথে কৃষকরা অধিক ফলনের পাশাপাশি ভালো মুনাফা ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন।
মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার চক্রবর্তী বলেন, কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের স্বার্থে আগামীতে মরিচের চাহিদা মেটাতে বারি-১ জাতের উচ্চ ফলনশীল মরিচের আবাদ চাষ বাড়াতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ উন্নত জাতের মরিচের চাষ কৃষক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে বাড়াতে পারলে মরিচের ঘাটতি কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং পাশাপাশি বিদেশে রফতানি করাও সম্ভব হবে বলে তিনি মনে করেন।