চলতি অর্থবছরের (২০১২-১৩) প্রথম মাসে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। জুলাই মাসে কৃষিতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৫.২২ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত বছর একই সময়ে এ ঋণের পরিমাণ ছিলো ৫৪৮ কোটি ৪ লাখ টাকা। যা মোট লক্ষ্য মাত্রার ৩.৯৭ শতাংশ। সে হিসাবে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য মতে, রাষ্টীয় মালিকানাধিন সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী এবং বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক জুলাই মাসে ২৭৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কৃষিতে বিতরণ করেছে। যা তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৩.২৩ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে এ খাতে এসব ব্যাংকের বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিলো ২৩৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। যা ছিলো তাদের মোট লক্ষ্যমাত্রার ২.৮২ শতাংশ।
এ সময়ে বেসরকারি ও বিদেশী মালিকানাধিন ব্যাংকগুলো এ খাতে ৪৫৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৮.৩২ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছে। গত বছর একই সময়ে এ ব্যাংকগুলো ৩০৮ কোটি ৩২ লাখ টাকা বা তাদের লক্ষ্যমাত্রার ৫.৮৩ শতাংশ ঋণ বিতরণ করেছিলো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য মতে, কৃষি খাতে সকল ব্যাংকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বেসরকারী ও বিদেশী ব্যাংকগুলোকে তাদের মোট ঋণের ন্যূনতম আড়াই শতাংশ বিতরণের নির্দেশ দেয়া হয়। এ নীতিমালার আলোকে অর্থবছরের শুরুতে লক্ষ্যমাত্রা দেয় ব্যাংকগুলো। সে মোতাবেক চলতি অর্থবছরে ১৪ হাজার ১৩০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত অর্থবছরে (২০১১-১২) এ খাতে ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। এবারে মোট ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ায় স্বাভাবিকভাবেই বিতরণের পরিমাণও বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, মাঠে-মাঠে গিয়ে কৃষকদের ঋণ নিতে আগ্রহী করে গড়ে তোলা এবং কৃষকরা ঋণ পাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে সরাসরি মনিটরিং করা হচ্ছে। ফলে কৃষি ঋণ বিতরণে আগের তুলনায় অনেক বেশি স্বচ্ছতা এসেছে। এতে করে একদিকে যেমন প্রকৃত কৃষক ঋণ পাচ্ছেন, অন্য দিকে বিতরণের পরিমাণও বাড়ছে।
কৃষি ঋণ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান মাঠে-মাঠে গিয়ে কৃষকদেরকে ঋণ নিতে উদ্বুদ্ধ করছেন। একই সঙ্গে গভর্নর এবং অন্যান্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের কঠোর নজরদারির ফলে ঋণ নিতে কৃষকদের কোন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। যে কারণে গত দুই দুটি অর্থবছরে প্রায় শতভাগ ঋণ বিতরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়েছে। এ বছরে কৃষিতে শতভাগ সাফল্য আসবে বলে তিনি মনে করেন।