কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশে প্রথমবারের মতো চালু করতে যাচ্ছে টাকার জাদুঘর। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি মিউজিয়ামকে বড় আঙ্গিকে টাকার জাদুঘর হিসেবে পুনর্গঠন করা হচ্ছে। প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের সব ধরনের ধাতব মুদ্রা ও কাগজি নোটের সংগ্রহ থাকবে এই জাদুঘরে। এ জাদুঘরে বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের প্রায় সব দেশের মুদ্রা ও ব্যাংক নোট স্থান পাবে। পরবর্তী বিজয় দিবসেই এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাসগুপ্ত অসীম কুমার সকালের খবরকে বলেন, একটি দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বহন করে সে দেশের মুদ্রা। পরবর্তী সময় নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের অতীত ঐতিহ্য তুলে ধরতেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফ থেকে এ ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মুদ্রা একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রতীক বলেও তিনি মন্তব্য করেন। বর্তমান ও ভবিষ্যত্ প্রজন্মের সামনে ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে সাক্ষী এসব মুদ্রা ও কাগজি নোট নিয়ে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের শুরুতে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্বল্প আয়তনের কারেন্সি মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেখানে বিশ্বের সব দেশেরই মুদ্রা ও নোট প্রদর্শিত হচ্ছে। এটাকেই বড় আকারে পুনর্গঠন করে টাকার জাদুঘর হিসেবে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের স্বনামধন্য শিল্পী, স্থপতি, ইতিহাসবিদ এ প্রকল্পে একযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছেন বলে তিনি জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমি চত্বরে টাকার জাদুঘর পুনর্গঠনের কাজ চলছে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক জাদুঘরের জন্য বর্তমানে অপ্রচলিত মুদ্রা ও কাগজি নোট সংগ্রহ করছে। এই জাদুঘরকে সমৃদ্ধ করতে আমরা বিভিন্নভাবে দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও কাগজি নোট সংগ্রহ করছি। দেশবাসী এ জাদুঘরে তাদের সংগ্রহে থাকা দুর্লভ মুদ্রা বা কাগজি নোট অনুদান বা বিনিময় মূল্যের মাধ্যমে প্রদান করতে পারবে। হাজারো মুদ্রা ও কাগজি নোট স্থান পাবে এই জাদুঘরে। প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে পাল বংশ, সেন বংশ, গুপ্তযুগ, সুলতানী ও মোগল আমলের মুদ্রা এবং কাগজি নোট থাকবে এখানে। ইতিহাসের নিদর্শনস্বরূপ এ জাদঘরে থাকবে ব্রিটিশ, পাকিস্তান ও স্বাধীন বাংলাদেশের মুদ্রা ও কাগজি নোটও। এর পাশাপাশি বিশ্বের প্রায় দেশের মুদ্রা ও কাগজি নোট স্থান পাবে।