কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সেচে নতুন ২০ প্রকল্প

দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে আরো ২০টি নতুন সেচ প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে সরকার।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কে এম শহীদুজ্জামান সোমবার এ তথ্য জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, আগামী তিন বছরে বাস্তবায়নের জন্য নতুন ২০টি সেচ প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে সরকার। এসব প্রকল্পের আওতায় তিন লাখ ৩৬ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড স¤প্রতি নতুন করে নেওয়া এ ২০টি প্রকল্পের তালিকা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি।
নতুন ২০টি প্রকল্পের এ তালিকায় রয়েছে- তিস্তা প্রধান খাল এবং তিস্তা ব্যারেজ সম্পর্কিত কাঠামো পুনর্বাসন এবং সংরক্ষণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়), চাঁদপুর কুমিল্লা সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; বরিশাল সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন প্রকল্প; গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের পুনর্বাসন প্রকল্প; গুপ্তখালি জলাধার সেচ প্রকল্প; মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর, শিবালয়, ঘিওর ও হরিরামপুর উপজেলায় যমুনা-পদ্মা নদীর বামতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ ও সেচ প্রকল্প; নরসিংদী জেলার শিবপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, বাঁধ ও সেচ প্রকল্প; উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প; খাল-পুনঃখনন এবং রেগুলেটরসমূহ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলার ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় পোল্ডারগুলোতে সেচ সুবিধা দেওয়ার জন্য খালগুলোর মিষ্টি পানি সংরক্ষণ প্রকল্প; করতোয়া নদীর ডানতীরে সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জের টাংগন নদীতে রাবার ড্যামের মাধ্যমে সমন্বিত সেচ প্রকল্প; দিনাজপুর সদর উপজেলার গৌরিপুরে শুষ্ক মৌসুমে সম্পূরক সেচ দিতে পুনর্ভবা নদীতে সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্মাণ প্রকল্প; কুড়িগ্রাম সেচ প্রকল্প (উত্তর ইউনিট) দ্বিতীয় পর্যায়; কুড়িগ্রাম সেচ প্রকল্প (দক্ষিণ ইউনিট) দ্বিতীয় পর্যায়; রাজৈর-কোটালীপাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নবীনগর এবং কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বুড়ি-তিতাস সেচ ও নিষ্কাশন প্রকল্প; ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া সদর, বিজয়নগর ও সরাইল উপজেলায় মেঘনা-তিতাস এফসিডি প্রকল্প; চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় মালিয়ারা-বাকখাইন-ভান্ডারগাঁও বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প এবং নদী তীর সংরক্ষণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও নিষ্কাশনগুচ্ছ প্রকল্প (৬৪টি উপ-প্রকল্প)।
পাউবোর চেয়ারম্যান বলেন, সেচের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সরকার বর্তমানে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে বর্তমান সরকারের সময়ে ইতোমধ্যে দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শেষ হয়েছে। আরো নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, বর্তমান সরকারের সাড়ে তিন বছরে মহামায়া ছড়া সেচ প্রকল্প এবং দক্ষিণ কুমিল্লা ও উত্তর নোয়াখালী সমন্বিত নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়েছে।
আর যে নয়টি সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ চলছে সেগুলো হলো- মাতামহুরী সেচ প্রকল্প; দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প; তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়); দিনাজপুরের বিরল উপজেলার ঢেপা-পুনর্ভবা পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প; পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের সংযোগ নদী খনন (সেচ সুবিধার উন্নয়ন ও মৎস্যচাষ প্রকল্প); তাড়াইল পাচুরিয়া সমন্বিত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প; ঢেপা নদীর বামতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; সুরমা নদীর ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প এবং মহুরী কহুয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বর্তমানে ছোট ও বড় মিলিয়ে ১১৬টি সেচ এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।