বন সংরক্ষণে সহ-ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে জাতিসংঘ ইকুয়েটর পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর ভিভো রিও কনফারেন্স সেন্টারে পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুচ আলী অংশ নেন। চুনুতি ওয়াইল্ড লাইফ সেন্সুয়ারি’র সহ সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষে এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
শুক্রবার পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সহ-ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির সাফল্যের জন্য বন বিভাগের কো-ম্যানেজমেন্ট কার্যক্রমের অধীনে বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন চুনতি ওয়াইন্ড লাইফ সেন্সুয়ারি’র কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত ‘ইকুয়েটর ফোরাম’ কর্তৃক ‘ইকুয়েটর প্রাইজ-২০১২’-এর জন্য মনোনীত হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে বিশ্বের ৬৬টি দেশের ৮১২টি কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটিকে মনোয়ন প্রদান করা হয়। এর মধ্য থেকে মাত্র ২৫টি কমিটিকে পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের চুনতি ওয়াইন্ড লাইফ সেন্সুয়ারি’র কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি অন্যতম।
পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে ইথিওপিয়া, মরক্কো, গুয়াতেমালা, মাদাগাস্কার, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, মেক্সিকো, সেনেগাল, চীন, কেনিয়া, মিশর, মার্শাল আইল্যান্ড, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, ফিজি, সোয়াজিল্যান্ড, জাম্বিয়া, টোগো, তাজিকিস্তান, কলাম্বিয়া, নাইজেরিয়া ও সুদান।
এছাড়া ১০টি থিমেটিক এরিয়াতে ১০টি দেশকে বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সম্প্রদায় ভিত্তিক অভিযোজনে মার্শাল আইল্যান্ড, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ব্রাজিল, শুষ্ক ভুমি ব্যবস্থাপনায় ইথিওপিয়া, খাদ্য ও জ্বালানি ব্যবস্থাপনায় তাজিকিস্তান, টেকসই জ্বালানি ব্যস্থাপনায় মিশর, পানি ব্যবস্থাপনায় ভারত, উপকূলীয় বনাঞ্চল ব্যবস্থাপনায় লাইবেরিয়া, সমূদ্র উপকূল ব্যবস্থাপনায় ইন্দোনেশিয়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কলাম্বিয়া ও নারীর ক্ষমতায়নের জন্য সোয়াজিল্যান্ডকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
সারা বিশ্বে আজ এটা স্বীকৃত যে, সরকারের একার পক্ষে রক্ষিত এলাকার বনজ সম্পদ রক্ষা করা সম্ভবপর নয়। সেই লক্ষ্যে ক্ষয়িষ্ণু প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার দেশের কয়েকটি সংরক্ষিত বন ও জলাভূমিতে সহ-ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে আশানুরূপ ফল পেয়েছে। তারই আলোকে সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম অন্যান্য সংরক্ষিত এলাকায় সম্প্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশে বর্তমানে ৩৪টি সংরক্ষিত বন এলাকার মধ্যে ১৯টি সংরক্ষিত বন, ৪টি সংরক্ষিত জলাভূমি এবং ২টি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা আইপ্যাকের আওতায় রয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যান্য সংরক্ষিত বন এলাকাগুলোকেও সহ-ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের আওতায় আনার জন্য সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।