উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রু¯-ম আলীকে সাথে নিয়ে শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরে ফিনলে টি কোম্পানির খাইছড়া চা বাগানে বাগানে পৌছালে দেখা হয় ১৫/১৬ বছরের এক চা শ্রমিক সš-ান রানা তাঁতীর সাথে। শ্রমিক কুমার দুধ বংশির বাড়ি কোন দিকে জানতে চাইলে সে জানায় কৃষক কুমার দুধ বংশি কিনা। আমরা তাকেই খোঁজ করছি জানালে সে সোজা আমাদের নিয়ে যায় কুমার দুধ বংশির সবজী ক্ষেতে। সেখানেই দেখা হয় দুধ বংশির সাথে। দুধ বংশি তার ছেলেসহ আরো কয়েকজন শ্রমিক তার সবজী ক্ষেতে কাজ করছেন। চা বাগানের পাশে বাগানের রেশনের পরিবর্তে নেয়া কৃষি জমিতে কাজ করছেন তিনি। জমিগুলোতে তিনি বর্তমানে বর্ষাকালিন সবজী ফসল ঝিংগা, করলা ও বরবটি ফলাচ্ছেন। তার ক্ষেতের ঝিঙ্গা ও করলা দেখে চোখ জোড়ালো। এক একটি পুষ্ট ঝিঙ্গার ওজন ৪০০ গ্রাম থেকে ৫০০ গ্রাম পর্যš-। একই ভাবে করলার ওজন ২৫০ গ্রাম থেকে ৩০০ গ্রাম পর্যš-। এ মৌসুমে তিনি এ পর্যš- প্রায় ৩০ হাজার টাকার ঝিঙ্গা বিক্রি করেছেন। একই সাথে করলা ও বরবটি বিক্রি করেছেন আরো প্রায় ৫০ হাজার টাকা। বরবটি শেষ হয়ে গেলেও তার ঝিঙ্গা ও করলা বাজারজাত সবে শুরু হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আগামী দুই মাস প্রতিদিন ৩০/৪০ কেজি করে বিক্রি করতে পারবেন। তার সাথে আলাপ করে আরো জানা যায়, তিনি বিগত ৫/৬ বছর ধরে ফসল উৎপাদন করছেন।
বিগত ২ বছর ধরে কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরনায় বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ শুরু করেন এবং সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। কৃষি বিভাগ তাকে চা বাগান এলাকার মডেল কৃষক হিসেবে রূপাš-রিত করার লক্ষ্যে পরামর্শসহ প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শণী স্থাপন করে তাকে উৎসাহিত করে। এক পর্যায়ে মনোবল বৃদ্ধি পায় ও বিশাল এলাকা জুড়ে শুরু করেন ফসল উৎপাদন। গত রবি মৌসুমে তিনি রাজা টমেটু চাষ করে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। একই ভাবে আলুর চাষ করে প্রায় ১০০ মন আলু উৎপাদন করেন। এখন তার দেখাদেখি বাগানের অনেক শ্রমিকই তাদের জমিতে ও বাড়ির আনাচে কানাচে বিভিন্ন জাতের সবজী ফলাচ্ছেন। এ ব্যাপারে এ সফল কৃষক জানান, শ্রীমঙ্গল উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রু¯-ম আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকল্প দাশ এর পরামর্শে তিনি বানিজ্যিক ভাবে সবজী চাষ শুরু করেন।
এ ব্যাপারে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. রু¯-ম আলী জানান, চা বাগান এলাকায় কৃষকের সংখ্যা খুব কম। খাইছড়া চা বাগানের কুমার দুধ বংশির কৃষিতে আগ্রহ দেখে তার মাধ্যমে এনএটিপি প্রজেক্টের জৈবিক বালাই ব্যবস্থাপনা (ঝিঙ্গা প্রদশর্নী) ও চাষী পর্যায়ে উন্নত মানের ধান বীজ উৎপাদন প্রদর্শনী স্থাপন করে এলাকায় কৃষি উৎপাদনে চা শ্রমিকদের চাষাবাদে আগ্রহ সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। কুমার দুধ বংশীর সবজী চাষ ক্রমশ সকলের কাছে ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজনের কাছে ইতিমধ্যে আদর্শ কৃষক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। ব্যাপক জনপ্রিয়তায় তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদেও বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুকল্প দাশ বলেন, কুমার দুধ বংশির মতো প্রগতিশীল কৃষক এলাকার অনগ্রসর কৃষকদের অনুপ্রেরণা হতে পারে।