রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের জ্বালানী চুক্তি

গ্যাযপ্রম রাশিয়ার বৃহত্তম জ্বালানী কোম্পানী

বাংলাদেশের কয়েকটি গ্যাস ক্ষেত্রে কূপ খননের লক্ষ্যে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান গ্যাযপ্রম বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় প্রায় বিশ কোটি মার্কিন ডলারের এক চুক্তি সই করেছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম জ্বালানী কোম্পানী গ্যাযপ্রম এই প্রথম বাংলাদেশে জ্বালানী খাতে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি করলো।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় জ্বালানী সংস্থা পেট্রোবাংলার তিনটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানী লিমিটেড এবং জ্বালানী অনুসন্ধান এবং উত্তোলনকারী সংস্থা বাপেক্সের সাথে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর করে গ্যাযপ্রম।

চুক্তির আওতায় গ্যাযপ্রম মোট ৬ টি গ্যাসক্ষেত্রে ১০ টি কূপ খনন করবে ।

বাংলাদেশের পক্ষে এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং গ্যাযপ্রমের পক্ষে সংস্থাটির উপ-মহা ব্যবস্থাপক ইয়ুরি স্কক চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন।

নতুন সহযোগিতার শুরু

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান হোসেন মনসুর বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপর রুশ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলন শুরু হলেও দীর্ঘদিন জ্বালানী ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে কোন চুক্তি ছিল না।

রাশিয়ার সঙ্গে এটি সহযোগিতার শুরু এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে চলবে

হোসেন মনসুর, চেয়ারম্যান, পেট্রোবাংলা

“শুধুমাত্র দশটি কূপ খনন করেই শেষ নয়। তারা এখানে তাদের জ্বালানী বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে প্রশিক্ষনের জন্য একটি ইনস্টিটিউট করবে। সেজন্যে কিছুদিনের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। এটি সহযোগিতার শুরু এবং এটি দীর্ঘদিন ধরে চলবে।”

চুক্তি অনুযায়ী, কূপ খননের জন্য এলসি খোলার ২০ মাসের মধ্যে এর কাজ শেষ করা হবে।

গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তি স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানী উপদেষ্টা এবং অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

তারা বলেন, বাংলাদেশে গত প্রায় আড়াই বছরে তেরটি গ্যাসকূপ খনন করা হয়েছে এবং এখন আরো দশটি কূপ খনন করা হলে গ্যাসের উৎপাদন আরো অনেক বাড়বে বলে তারা আশা করেন।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মি. স্কক ভবিষ্যতে বাংলাদেশে গ্যাযপ্রমের কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মি. স্কক বলেন, “আমরা আশা করি, বাংলাদেশে পেট্রোবাংলার সাথে গ্যাস কূপ খননের এই প্রকল্পটি শুধুমাত্র একটি শুরু। বাংলাদেশের জ্বালানী পেট্রোবাংলা সাথে এই অংশীদারিত্ব থেকে আমরা সিসমিক সার্ভে এবং স্থলে ও সমুদ্রে কূপ খননসহ পূর্নমাত্রায় জ্বালানী অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কাজ করার জন্য প্রস্তুত। এটি শুধু বাংলাদেশের হাইড্রোকার্বন উৎপাদনই বাড়াবে না, এটি বাংলাদেশের জ্বালানী নিরাপত্তাও নিশ্চিত করবে।”

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মি. মনসুর বলেন, গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তিটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি এবং এর আওতায় তারা এখন শুধুমাত্র নির্ধারিত এই দশটি কূপই খনন করবে। কূপের সম্পূর্ন মালিকানা বাংলাদেশের থাকবে।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা দাবী করেন, গ্যাযপ্রমের সাথে এই চুক্তির ফলে দশটি কূপ খননের গড় ব্যয় এর আগে অন্যান্য বিদেশী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কূপ খননের ব্যয়ের চেয়ে কম হবে।