বাংলাদেশ সফরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান ওডেস্কের সহসভাপতি ম্যাট কুপার। এ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী বিকল্প কর্মসংস্থানের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ‘আউটসোর্সিং’। ওডেস্কের তালিকায় বাংলাদেশ এখন শীর্ষ তিন এ অবস্থান করছে। এ কথাগুলো ওডেস্কের মার্কেটপ্লেসের সহ-সভাপতি ম্যাট কুপার বাংলানিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছেন।
এ সাক্ষাৎকার গ্রহণে বাংলানিউজের পক্ষে সার্বিক সহযোগিতা করেন হেড অব নিউজ মাহমুদ মেনন এবং ওয়েব এডিটর জিকরুল আহসান। আর ছবি তুলেছেন ফটো করেসপন্ডেন্ট শোয়ের মিথুন।
২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে পরিচিতি পেতে থাকে ওডেস্ক। মাত্র তিন বছরে ওডেস্কের পুরো কাজের ১২ ভাগ দখলে নিয়েছে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ প্রযুক্তিবিদরা। কিন্তু প্রথম স্তরে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ২ ভাগ।
আউটসোর্সিংয়ের বাংলাদেশের সম্ভাবনার ব্যাপারে বাংলানিউজের কাছে উৎসাহব্যঞ্জক তথ্য তুলে ধরেন ম্যাট কুপার। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে আমলে নিয়েছে ওডেস্ক। এ জন্যই সফরে এসেছেন ওডেস্কের দুজন যোগাযোগ কর্মকর্তা। এ সফরে কুপারের সঙ্গে এসেছেন ওডেস্কের কন্ট্রাকটর কমিউকেশনের মুখপাত্র মনিকা চুয়া। তিনিও বাংলানিউজকে জানিয়েছেন দারুণ সব সম্ভাবনার কথা।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭০ ভাগই তরুণ। বিশ্বের খুব কম দেশেরই এ শক্তি আছে। একে ইয়ুথ পাওয়ার বা ‘যুবশক্তি’ বলে অভিহিত করেন আউটসোর্সিং-বিশ্বের দিকপাল কুপার। এর আগেও গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ই-এশিয়া সফরে এসে লাখ লাখ তরুণকে মাতিয়ে গেছেন তিনি। ব্যাখ্যা করেছেন আউটসোর্সিংকে। জানিয়েছেন বিকল্প কর্মসংস্থানের কথা। জয় করতে বলেছেন হতাশা আর বেকারত্বকে। হাসি আর সুস্পষ্ট বাক্য তরুণরা সহজেই বুঝতে পারে। এ অর্থে বাকপটু আর মিষ্টভাষী কুপারের মতো ব্যক্তিত্ব বাংলাদেশে খুবই কমই এসেছেন।
বাংলাদেশের এ খাতে ৫ হাজার কোটি টাকা আয় করার সুযোগ আছে। এটি দ্বিগুণ হলেও কোনো অবাক হবার মতো ঘটনা হবে না। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের লাখ লাখ তরুণ-তরুণী ওডেস্কের জন্য কাজ করছেন। আর আয়ও করছেন তুলনামূলক অনেক ভালো। গড়ে বাংলাদেশে ওডেস্কের প্রতিটি কর্মী ৬ হাজার টাকার মতো মাসিক আয় করছেন। এটি অফুরান সম্ভাবনার সূচনা মাত্র।
এ মুহূর্তে অনলাইন চাকরিতে ওডেস্কের হয়ে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি কাজ করছে ‘সার্চ ইঞ্চিন অপটিমাইজেশন’ খাতে। এটি সহজেই করা যায় বলে এ দিকটায় তরুণরা বেশি আকৃষ্ট হন।
তবে অ্যানড্রইড অ্যাপ, ট্রেড এন্ট্রি, পিএইচপি কোডিং এবং সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট খাতে আরও বেশি তরুণ আগ্রহী হলে গুণসম্পন্ন এবং দক্ষ কর্মী তৈরি করা সম্ভব। তখন ঘণ্টাভিত্তিক আয় ১০ ডলার থেকে বেড়ে ১০০ ডলার পৌঁছতে পারে। বাংলাদেশের তরুণদের এ ধরনের যোগতা এবং দক্ষতা আছে বলে ম্যাট কুপার স্পষ্টই জানালেন। বাংলাদেশের তরুণ সমাজ অনেক বেশি মেধাবী এবং সম্ভাবনাময়। এদের শুধু সঠিক ক্যারিয়ারভিত্তিক দিকনির্দেশনা দিলেই বেকারত্বে বিপরীতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
ওডেস্ক ওয়ার্ল্ড ওয়ার্ক র্যাংকিংয়ে মাত্র ৩ বছরে শীর্ষ ৩-এ উঠে আসা এরই বাস্তব প্রমাণ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশ এখন জব রেন্টারদের কাছে বিশ্বব্যাপী পরিচিত এবং জনপ্রিয়।
বাংলাদেশে শাখা অফিস করার কোনো পরিকল্পনা আছে কি না বাংলানিউজের করা এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাট কুপার হাসিমুখে বললেন, “আমাদের তো অফিস আছে সবখানেই। তবে তা ভার্চুয়াল এবং গ্লোবাল। অফিসহীন কাজকেই তো ‘আউটসোর্সিং’ বলে। এখানে দেশ কোনো বিষয় নয়। সময়মতো সঠিক কাজ আর দক্ষতাই এখানে মুখ্য বিষয়।“
বিকেলে ‘কন্ট্রাকটর অ্যাপ্রিসিয়েশন ডে’ উপলক্ষে বাংলাদেশের শীর্ষ দু শতাধিক তরুণকে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন ওডেস্কের মার্কেট প্লেস অপারেশন্সের সহ-সভাপতি ম্যাট কুপার। বাংলাদেশ এ মুহূর্তে ওডেস্কের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ কর্মবাজার বলে অভিহিত করেন কুপার।
অচিরেই আবারও বাংলাদেশ সফরে আসার দৃঢ় ইচ্ছার কথা জানালেন ওডেস্কের শীর্ষ এই কর্মকর্তা। তবে এর মধ্যে বেশ ক`টি দেশ ভ্রমণের কথাও জানান ম্যাট কুপার।
এখন বিশ্বের তরুণ সমাজের কাছে স্বাধীন, সম্মানজনক কিন্তু দক্ষতানির্ভর চাকরি মানেই আউটসোর্সিং। এ উন্মাদনা ছড়িয়েছে বাংলাদেশেও। এ মুহূর্তে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার বাড়ছে ক্রমেই। মেধাবী তরুণরা ক্রমেই হতাশায় ডুবে যাচ্ছে। এ সময়ে আউটসোর্সিং নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে। তবে এ নিয়ে অনেক প্রশ্নেরই তৈরি হয়েছে।
আউটসোর্সিয়ের জন্য বাংলাদেশের তরুণরা কতটা প্রস্তুত। কিংবা অবকাঠামোগত সুবিধা-অসুবিধাগুলো কি অবস্থায় আছে এ প্রশ্নে ম্যাট কুপার বাংলানিউজকে বলেন, এ দেশের তরুণরা দ্রুতই আউটসোর্সিংকে আয়ত্ব করেছে। আর আয়ও করতে শুরু করেছে। এটা সুবিধার দিক।
অন্যদিকে অসুবিধার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বিদ্যুৎ শক্তি। অনলাইন সংস্কৃতির জন্য বিদ্যুৎ শক্তি অপরিহার্য। এর কোনো বিকল্প মাধ্যম থাকলেও তা ব্যয়বহুল। তাই এ অবস্থার সুরাহা না হলে আউটসোর্সিং সম্ভাবনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।
এ ছাড়াও ইন্টারনেট গতি মোটেও সন্তোষজনক অবস্থায় নেই। এ সময় কুপার ইউনিভার্সেল ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ডকে (ইউডব্লিউবি) বাস্তবায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্বের অন্য সব দেশে আউটসোর্সিংয়ে এ ইন্টারনেট ব্যবহার হয়।
এ প্রসঙ্গে কুপার উদাহরণ টেনে বলেন, এ দুটি বড় ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকার পরও বাংলাদেশের ওডেস্ক কন্ট্রাক্টররা অপ্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করেছে। ভবিষ্যতেও এ খাতে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন এবং অ্যানড্রইয়ের অ্যাপস ও আইওএস এর ব্যাপক চাহিদা। বাংলাদেশের খুদে প্রযুক্তিবিদেরা এ খাতে নিজেদের আরও দক্ষ করে তুলতে ওডেস্ক তাদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে। এতে আয় এবং আউটসোর্সিং র্যাঙ্কে বাংলাদেশ আরও উচ্চতায় চলে আসবে।
বাংলাদেশের তরুণরা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সিলিকন ভ্যালিতেও প্রকল্পভিত্তিক কাজের যোগ্যতা রাখে। শুধু প্রয়োজন কাজের ধরন বুঝে কাজের অর্ডার নেওয়া। আর সঠিক সময়ে দক্ষতার সঙ্গে পার্টির কাজ সুসম্পন্ন করা। গত ৩ বছরে বাংলাদেশ আউটসোর্সিংয়ে ভালোই দক্ষতা অর্জন করেছে। আর ভবিষ্যতেও এ খাত বাংলাদেশের জন্য বিপুল সম্ভাবনার ইঙ্গিত বহন করছে।
আর দক্ষতা অর্জনে বাংলাদেশের আউটসোর্সিং কন্ট্রাক্টররা ওডেস্কের কর্মীদের সঙ্গে স্কাইপি চ্যাটের সহযোগিতা নিতে পারে। আর সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (এসইএম) দারুণ কাজের সুযোগ তৈরি করেছে। এ খাতে বাংলাদেশের তরুণদের আয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এক্ষেত্রে কমপিউটার সায়েন্সের তুলনায় অভিজ্ঞ এবং উদ্ভাবনী (আইডিয়া) জ্ঞান আছে এমন কর্মীদের বাজার চাহিদা এবং কদর দুটোই বেশি। বাংলাদেশে এ ধরনের আউটসোর্সিং কন্ট্রাকটরদের সংখ্যা অনেক বেশি। আর দক্ষতা আর আগ্রহের কমতি নেই। এ শক্তিকে কাজে পরিণত করতে পারলে একটা বিপ্লবও হয়ে যেতে পারে। একে ‘ইয়াঙ্গ অ্যানর্জি বিপ্লব’ বললে মোটেও ভুল হবে না।
এ ছাড়াও ওয়েব রিসার্চ (ডব্লিউআর) নিয়েও কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিশ্বের কোটি কোটি সাইটের জন্য গবেষণা এবং উন্নয়নে কাজ করতে পারলে ভালো কাজের সুযোগ আছে। এমনকি ওয়েবসাইটে পিআর (পাবলিক রিলেশন) করেও এখন ভালোই আয় করছে বাংলাদেশিরা।
এ মুহূর্তে ওয়েব ডেলেপমন্টে, রাইটিং অ্যান্ড ট্যানসেলেশন, কাস্টোমার সার্ভিস, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সাপোর্ট, নেটওয়ার্কিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম, ডিজাইন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া এবং বিজনেস সার্ভিসেস এ কয়েকটি বিভাগে আউটসোর্সিং কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে ওডেস্ক।
সব মিলিয়ে নিজের যোগ্যতা আর দক্ষতার সঙ্গে নিয়মিত ইংরেজি চর্চা করলে আউটসোর্সিং হয়ে উঠতে পারে চাকরির বিকল্প কর্মসংস্থান। এ জন্য অফিস কোনো মুখ্য বিষয় নয়। সঠিক সময়ে জব রেন্টারের কাজ দিতে পারলেই আয়ের পথটা আরও সুনিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশ আইসিটি খাতে দারুণ এগিয়েছে। এ দেশের ৭০ ভাগ প্রজন্মই তারুণ্যনির্ভর। তাই জনসংখ্যা এদেশের জন্য সমস্যা নয়। বরং সম্পদ। তবে সুদক্ষ আর পেশাভিত্তিক দক্ষতা ছাড়া এ সমস্যা জাতীয় সম্পদ হিসেবে কাজে আসবে না। এ জন্য সরকারকে প্রণোদনা প্যাকেজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
এদেশের উৎসাহী তরুণরা ওডেস্কের তালিকায় নিজেদের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছে। ওডেস্ক তাদের জন্য সশরীরে সনদ বয়ে এনেছে। এ সম্মননায় বাংলাদেশের তরুণদের আরও উৎসাহিত হবে। কাজে উদ্যোম আসবে।
এ সময়ে পুরো বিশ্বেই আউটসোর্সিং নির্ভরতা বাড়ছে। স্থির অফিসের তুলনায় এখন চলমান (ভার্চুয়াল) অফিস পদ্ধতিই জনপ্রিয় হচ্ছে। আর বাংলাদেশে এ কাজের জন্য চমৎকার পরিবেশ আছে। এ খাতে সুনির্দিষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন আছে। তরুণ উৎসাহ চায়। আর তা তাদের দিতে পারলেই যেকোনো অর্জনই সহজ হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ গত ৩ বছরে আউটসোর্সিংয়ে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে তুলে ধরেছে। বিশ্বের কোনো দেশই এখন আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশকে খাটো করে দেখে না। বরং সর্বোচ্চ বিবেচনায় নিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী আউটসোর্সিয়ের অর্ধেক বাজারই এখন ওডেস্কের দখলে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এ কাজের জন্য সবেচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। আর সাফল্যটাও নিঃসন্দেহে ঈর্ষণীয়। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম আউটসোর্সিংবান্ধব। কিছু সীমাবদ্ধতা আর অদক্ষতা যে একেবারে নেই তা কিন্তু নয়। তবে তা কাটিয়ে ওঠা খুবই সম্ভব।
বাংলাদেশের জন্য অনলাইন অর্থনীতিতে গবেষণা এবং উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ‘সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন’ (এসইও) খাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। তবে এ সীমাবদ্ধতা অচিরেই কাটিয়ে উঠতে হবে।
আউটসোর্সিং চাকরিতে আরও সুদক্ষ জায়গায় বাংলাদেশের তরুণদের প্রবেশ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আউটসোর্সিং কন্ট্রাকটররা ঘণ্টায় ন্যূনতম ১৫ থেকে ২০ ডলার আয় করে। বাংলাদেশে কন্ট্রাকটররা ঘণ্টায় ন্যূনতম ৫ থেকে ১০ ডলার আয় করছে।
তবে অনলাইনে ডলার পেমেন্ট প্রসঙ্গে হাসিমুখেই ম্যাট কুপার বাংলানিউজকে বলেন, পেপল, পেপল অ্যান্ড পেপল। এটা সত্যিই একটি বড় বাধা। এ নিয়ে ওডেস্ক সরকারের সঙ্গে ‘ডায়লগ ওপেন’ করেছে। অচিরেই গ্লোবাল ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে ওডেস্ক তাদের পেমেন্ট পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছে।
এটি সম্ভব হলে বাংলাদেশে আউটসোর্সিংয়ে তাদের সবচেয়ে বড় বাধাটি অতিক্রম করবে। তখন আরও বেশি তরুণ এ খাতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
ওডেস্কের কাজের জন্য অনেক তরুণ তাদের নিয়মিত পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে উঠছে-বাংলানিউজের করা এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যাট কুপার বলেন, সবার আগে একাডেমিক পড়াশোনা। কোনোভাবেই নিয়মিত শিক্ষার বাইরে গিয়ে আউটসোর্সিংয়ে অমনোযোগী হওয়ার সুযোগ নেই।
এদিকে ওডেস্কের কন্ট্রাকটর কমিউকেশনের মুখপাত্র মনিকা চুয়া বাংলানিউজকে বলেন, শুধু কাজ জানলে আর কাজের খবর রাখলেই আউটসোর্সিংয়ে ভালো করার যায় তা নয়। আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেসে নিজের দক্ষতা আর যোগ্যতার সঙ্গে কাজের সম্বনয় করাটাও একটি বিশেষ গুণ।
বাংলাদেশের উদীয়মান এ খাতে তরুণদের এ অংশে একটা ঘাটতি লক্ষ করা যায়। এখানে তরুণরা একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল। নিজে থেকে জানার আগ্রহরা অনেকেরই একটু কম। এ জন্য শুধু সার্চ ইঞ্চিন অপটিমাইজেশন নিয়েই বেশি কাজ হচ্ছে বাংলাদেশে।
আগামী ২০১৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমান আউটসোর্সিং বাজারে দ্বিগুণ দখলে নেবে। এ বিশাল বাজার পেতে অনেক আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশকে আমলে নিয়েছে। ওডেস্কের শীর্ষ দু কর্মকর্তার এ সফরে এমন অভাসই সুস্পষ্ট হয়েছে।
এ সম্ভাবনাকে শুধু কাগজে-কলমে আর সমীকরণে না নিয়ে বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি। সম্ভাবনাময় এ বাজার থেকে বাংলাদেশ বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবে। এ জন্য সরকারি উৎসাহ আর উদ্যোগ একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে আউটসোর্সিং পেমেন্ট পদ্ধতি উন্মুক্ত আর সহজ হলে বাংলাদেশ দ্রুতই এ খাতে আরও চমক দেখাবে। এমন প্রত্যাশাই রেখে গেছেন বাংলাদেশ সফরে আসা ম্যাট কুপার।